সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছিল। তার জেরে, ১০-১২টি গাড়ি করে একাধিক দুষ্কৃতী-সহ বহিরাগত জুটিয়ে হাওড়ার শ্যামপুরের এক যুবককে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তাঁর সৎ-মা ও সৎ-বোনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকেলের সে চেষ্টা অবশ্য ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের তৎপরতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই ধরা পড়ে মোট ১৮ জন। উদ্ধার করা হয় প্রসেনজিৎ কাঁড়াল নামে ওই যুবককে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে ওই যুবকের সৎ-মা শীলা, সৎ-বোন মনীষা এবং মনীষার বন্ধু সৌরভ দত্ত রয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, সৌরভই সব ব্যবস্থা করে। হাওড়া ও হুগলি থেকে বেশ কিছু দুষ্কৃতীকে ভাড়া করে প্রসেনজিৎকে অপহরণের চেষ্টা হয়।
হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সুবিমল পাল বলেন, ‘‘হোটেলের মালিকানা নিয়ে একটি পরিবারের দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলার জেরে এক যুবককে অপহরণ করা হচ্ছিল। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করেছে। ১৮ জনকে ধরা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
শ্যামপুরের ব্যবসায়ী মদনমোহন কাঁড়াল বছর দেড়েক আগে মারা যান। মদনমোহনের ইটভাটা, হোটেল-সহ নানা ব্যবসা ছিল। তাঁর প্রথম পক্ষের চার মেয়ে এবং ছেলে প্রসেনজিৎ। দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান মনীষা। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ২০০৬ সালে নিখোঁজ হন। মদনমোহনের মৃত্যুর পরে, দুই পক্ষের ছেলেমেয়েদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। শীলা-মনীষার অভিযোগ, প্রথম পক্ষের ছেলেমেয়েরা তাদের বঞ্চিত করে মদনমোহনের সব সম্পত্তি ভোগ করছেন। সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে একাধিক বার দু’পক্ষের গোলমাল হয়েছে।
গড়চুমুকের ৫৮ গেটে মদনমোহনের হোটেল চালান প্রসেনজিৎ। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, শুক্রবার বিকেলে শীলা ও মনীষা ১০-১২টি গাড়ি করে ৫০-৬০ জন পুরুষ-মহিলাকে নিয়ে হোটেলে ঢুকে তাঁকে মারধর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে প্রসেনজিতের দিদি টুসি পাল ৫৮ গেট পুলিশ ফাঁড়িতে জানান। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ওই গাড়িগুলির পিছু নেয়। তিন কিলোমিটার ধাওয়া করে ধরে ফেলে। ৫৬ জনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, ৩৮ জনকে ভুল বুঝিয়ে আনা হয়েছিল। তাঁদের ছেড়ে দেওয়াহয়। মনীষার অবশ্য দাবি,‘‘আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা অপহরণ করিনি।’’