• ‘আত্মরক্ষায় মেরেছি’! অবশেষে শো কজ়ের জবাব তৃণমূলের বেবির, দাবি করলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেননি
    আনন্দবাজার | ০৭ জুলাই ২০২৫
  • খড়্গপুরে প্রবীণ বাম নেতাকে রাস্তায় টেনে এনে মারধরের ঘটনায় অবশেষে দলকে নিজের বক্তব্য জানালেন তৃণমূলনেত্রী বেবি কোলে। তাঁর দাবি, তিনি অনিল দাস ওরফে ভীমকে তিনি মারধর করেননি। বরং আত্মরক্ষার্থে প্রবীণের গায়ে হাত তুলেছিলেন। আর ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি খড়্গপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলনেত্রীর। তৃণমূল তাঁর কাছে জবাব চেয়েছিল তিন দিনের মধ্যে। শো কজ়ের চিঠি পাওয়ার ছ’দিন পরে জবাব দিলেন বেবি। যদিও নেতৃত্ব এখনও চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেননি বলে জানিয়েছেন।

    গত ৩০ জুন, সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের খরিদা এলাকায় বাম নেতা অনিলকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ তৃণমূলনেত্রী বেবির বিরুদ্ধে। নিজেকে বাঁচাতে একটি রঙের দোকানে ঢুকে গিয়েছিলেন ওই প্রবীণ ব্যক্তি। সেখান থেকে তাঁকে টেনে বার করে এনে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন), বৃদ্ধের গায়ে রং ঢেলে তাঁকে জুতোপেটা করছেন বেবি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও এক মহিলা। অনিল কোনও রকম উঠে সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে টেনে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ‘আমরা বামপন্থী’ সংগঠনের নেতা। কয়েক দিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, বেবিকে ঘটনার দিনই শো কজ় করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি (সাংগঠনিক) সুজয় হাজরা। রবিবার ওই শো কজ়ের জবাব দিলেন বেবি।

    চিঠিতে বেবি লিখেছেন, ‘‘প্রথমে উনি (অনিল দাস) আমাকে নির্যাতন করেছেন। আত্মরক্ষা আমি পাল্টা ওই পথ বেছে নিয়েছিলাম।’’ তিনি জানান, এটা মারধর নয়, মারামারির ঘটনা এবং ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে গন্ডগোল হয়েছিল তাঁদের। এটা কোনও ‘তৃণমূল বনাম বামেদের’ বিষয় নয়। বেবি লিখেছেন, ‘‘আমি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ওই ব্যক্তি আমার ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক জীবনে ধারাবাহিক ভাবে হস্তক্ষেপ করে চলেছেন। আর আমাকে কী কী ভাবে উনি নির্যাতন করেছেন, তা যদি সুযোগ দেওয়া হয়, সেটাও আমি বলতে চাই। তবে একটি চিঠিতে সেগুলো বলা সম্ভব নয়।’’ এবং ওই তৃণমূলনেত্রীর বিশ্বাস, তিনি যে কাজ করেছেন তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়নি।

    উল্লেখ্য, এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন প্রহৃত অনিল। তিনি বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। নিরপেক্ষ বিচার চেয়ে অনিলের স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন। তাঁর অভিযোগ, বেবি প্রভাবশালী বলে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এফআইআর দায়ের হয়েছে। কিন্তু বেবিকে স্রেফ জিজ্ঞাসাবাদ করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, ওই তৃণমূলনেত্রী পাল্টা অনিলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।

    বেবির শো কজ়ের জবাব প্রসঙ্গে সুজয় বলেন, ‘‘অফিসিয়ালি চিঠি আমি হাতে পাইনি। সমাজমাধ্যমেই জানতে পেরেছি বিষয়টি। অফিসিয়ালি চিঠি হাতে পাই, তার পর বিষয়টি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করব। তখন প্রতিক্রিয়া জানাব।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)