কার বাড়ি না জেনে চুরি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়িতে, ধৃত
আনন্দবাজার | ০৭ জুলাই ২০২৫
সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়িতে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হল এক ব্যক্তি। ধৃতের নাম মইদুল ইসলাম মোল্লা। পুলিশ সূত্রের খবর, সে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার থানা এলাকার বাসিন্দা। আলিপুর আদালতে তোলা হলে তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভ্রাতুষ্পুত্র, শিশিরকুমার বসুর পুত্র তথা অধ্যাপক ও প্রাক্তন সাংসদ সুগত বসু বালিগঞ্জ থানায় চুরির লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগে জানান, সুভাষচন্দ্রের বাড়িতে তিনি ও তাঁর ভাই বসবাস করেন। সম্প্রতি ওই বাড়ির সামনের গ্রিল এবং জলের পাইপ চুরি হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও চুরি হয়েছে অন্য কয়েকটি জিনিস। তিনি ও তাঁর ভাই নিরাপত্তারঅভাব বোধ করছেন। সুগত আরও জানান, ওই বাড়িতে নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত বহু জিনিস রয়েছে। তাঁর নিজস্ব জিনিস ছাড়াও রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কিত বহু দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী। প্রায় প্রতিদিনই বিশিষ্টজনেরা যাওয়া-আসা করেন সেখানে। সেই বাড়িতেই চুরির বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে থানায় অভিযোগে জানান সুগত।
প্রসঙ্গত, কলকাতায় সুভাষচন্দ্রের দু’টি বাড়ি রয়েছে। একটি বাড়ি এলগিন রোডে। সেখানে রয়েছে সংগ্রহশালা। শরৎ বসু রোডে অন্য বাড়িটিতে সুগত এবং তাঁর ভাই সপরিবার বসবাস করেন। চুরির ঘটনার পরে দু’টি বাড়িতেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে বালিগঞ্জ থানা সূত্রের খবর। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। আরও কয়েকটি সূত্র যাচাই করে টালিগঞ্জ থানা এলাকা থেকে মইদুলকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, সেমাদকাসক্ত। কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ছোটখাট চুরি করায় সিদ্ধহস্ত সে। তাকে গ্রেফতারের পরে চুরি যাওয়া কয়েকটি জিনিস উদ্ধার হয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছে পুলিশ। সুভাষচন্দ্রের বাড়ির গ্রিল চুরি করে ভবানীপুরের একটি কারখানায় বিক্রি করে দিয়েছিল মইদুল। সেটিও উদ্ধার করা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, গভীর রাতে সুভাষচন্দ্রের বাড়িতে হানা দিয়েছিল মইদুল। গ্রিল এবং জলের পাইপ অনায়াসে খুলে নিয়ে চলে গিয়েছিল সে। তদন্তকারীদের দাবি, মইদুল জেরায় জানিয়েছে, মাদকের টাকার জন্যই চুরি করে সে। কিন্তু সুভাষচন্দ্রের বাড়িতে চুরির ঘটনায় সে অনুতপ্ত। বাড়িটি কার, সে তা জানত না।
আদালতে ধৃতের জামিনের আবেদন করেন মইদুলের আইনজীবী। তার বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে। অনায়াসে কী ভাবে চুরি করল অভিযুক্ত, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। চুরির আরও সামগ্রী উদ্ধারের প্রয়োজন আছে।’’ এর পরে বিচারক ধৃতের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।