• SSC নিয়োগ দুর্নীতিতে 'দাগী অযোগ্য'-দের কী হবে? বড় রায় হাইকোর্টের
    আজ তক | ০৭ জুলাই ২০২৫
  • এসএসসি পরীক্ষার নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত অযোগ্যদের কেন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে স্পষ্ট বারণ করা হল না? আগেই সেই প্রশ্ন তুলেছিল  কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যাঁরা টেন্টেড বা দাগী বলে চিহ্নিত, তাঁরা স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র নয়া নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন না। সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে  কলকাতা হাইকোর্ট।

    ২৬,০০০ চাকরি বাতিল মামলায় শূন্যপদে নতুন করে এসএসসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়ে একাধিক মামলা চলছে। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে একযোগে মোট ৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের বেঞ্চে চলছে তার শুনানি। বিচারপতি এদিন তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, 'আদালত ভাবছে, অযোগ্যদের পরীক্ষা থেকে বাদ দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে। সুপ্রিম কোর্টের সময়সীমার মধ্যেই সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া হোক।' উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কতবার তাঁরা ফল ভুগবে, সাজা পাবে?' বিচারপতি উত্তরে বলেন, 'তাঁরা প্রতারণা করে চাকরি পেয়েছে তাই তাঁরা বাদ যাবে।'

    এদিন হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘দাগি অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে বাদ দিতে হবে। সোমবার এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের নির্দেশ, কোনও ‘দাগী অযোগ্য’ প্রার্থী ইতিমধ্যেই যদি আবেদন করে থাকেন, সেই আবেদনপত্র বাতিল করতে হবে। হাইকোর্ট স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে গত ৩০ মে যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি, তাকে সামনে রেখেই নিয়োগপ্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে আদালত।  

    বিচারপতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, নতুন যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাতে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা অংশ নিতে পারবেন না। তাঁদের ছাড়াই সংগঠিত করতে হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নিয়েই করতে হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া। এসএসসি ও রাজ্যকে এই  নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্য কেউ ইতিমধ্যে আবেদন করে থাকলে,তাহলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। 

    প্রসঙ্গত, এদিন আদালতে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যদের পাশেই দাঁড়ায় রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন।  চিহ্নিত অযোগ্যদের পাশে দাঁড়িয়েই সওয়াল করেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি যে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। আদালতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা বয়সজনিত ছাড় পাবেন না। কিন্তু তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ  করতে পারবে না এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি সুপ্রিম কোর্টের তরফে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল শুনে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, 'এতবড় দুর্নীতির অভিযোগ, টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট, তারপরও এটা বলবেন ?' তখন স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী  বলেন, 'তদন্ত শেষ হয়নি, কিছু প্রমাণ হয়েছে ? কারও দোষ প্রমাণ হয়েছে? কোন আইনে এদের আটকানো হবে ?' কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়  আরও বলেন,নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায়  যদি নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা অংশ না নিতে পারেন, তাহলে তো ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া অসফল চাকরিপ্রার্থীরাও অংশ নিতে পারবেন না।' আদালতে এসএসসি-র দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নির্দিষ্টভাবে অযোগ্য বলে চিহ্নিত না হওয়া ব্যক্তিদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগ দিয়েছে। তার মানে এই নয় যে, সর্বোচ্চ আদালত নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যদের গোটা প্রক্রিয়া থেকে বার করে দিয়েছে। তবে কলকাতা হাইকোর্ট  সাফ নির্দেশ দিয়েছে,এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তি মেনে চলবে নিয়োগ, তবে যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে বা যাঁদের নাম চাকরি বাতিল হওয়া তালিকায় রয়েছে, তাঁদের আবেদন বাতিল করতে হবে। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই চূড়ান্ত। সেই নির্দেশ মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।’


     
  • Link to this news (আজ তক)