চারমাসেও বামনগোলায় ব্রিটিশ আমলের নীলকুঠির জমি দখলমুক্ত হয়নি, ক্ষোভ
বর্তমান | ০৮ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, হবিবপুর: চার মাস কেটে গেলেও বামনগোলা ব্লকের মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের মদনাবতীর নীলকুঠির জমি পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা ব্লক ভূমি দপ্তর ও জেলা শাসককে বিষয়টি জানালেও দখল হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক এই নীলকুঠির জমি উদ্ধারে কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। এতে হতাশ মদনাবতীর মানুষ।
পঞ্চায়েত সদস্যা প্রতিমা রায়ের কথায়, দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক এখানে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি দেখতে আসেন। জায়গাটিকে অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।
বামনগোলা ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পীযূষকান্তি জানা বলেন, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
উইলিয়াম কেরির নীলকুঠির ভগ্নাবশেষের জায়গায় মাটি ফেলে অনেকটা অংশ দখল করার অভিযোগ এলাকার দয়াল মহালদার সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। ভিতরে ভিতরে ওই জমির পাট্টাও তৈরি করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। সেই জমিতে নির্মাণ কাজও হচ্ছে বলে দাবি। প্রায় চার মাস আগে ক্ষোভে বাসিন্দারা কাজ বন্ধ করে দেন।
বিষয়টি তাঁরা ভূমিদপ্তর ও জেলাশাসককে লিখিতভাবে জানান। কিন্তু চার মাস কেটে গেলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না করায় হতাশ এলাকার মানুষ। ঐতিহাসিক এই নিদর্শন সংরক্ষণে প্রশাসন কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। এদিকে জমি দখল করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দয়াল মহলদার। বলেছেন, আমাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। সেই কারণে জায়গাটির দখল নিতে যাই। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিচ্ছেন।
স্থানীয়দের দাবি, দিনের পর দিন অল্প অল্প করে ঐতিহাসিক জায়গা দখল করছেন দয়ালরা। এলাকার প্রবীণরা বলছেন, এখানে কেরি সাহেবের নীলকুঠি সহ প্রায় ৫০ বিঘা জমি রয়েছে বলে জানি। জমি দখলের পর এখন নীলকুঠির ভগ্নাবশেষটিও দখল হতে বসেছে। বাইরের লোক এসে জমি দখল করে নিচ্ছেন।
অথচ ইতিহাসের দিক থেকে জায়গাটির গুরুত্ব অনেক। স্থানীয়দের বক্তব্য, কেরি সাহেব এখানে প্রথম ছাপাখানা বসানোর জন্য ঘর নির্মাণ করেছিলেন। তার ভগ্নাবশেষ এখনও রয়েছে। এই জায়গাটির পাট্টা কী করে একজন পেতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার বাসিন্দারা। ইতিহাস সমৃদ্ধ জায়গাটি সংস্কারের অভাবে জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা দেবপ্রিয় দাস জানান, অবিলম্বে পুরো জায়গা দখলমুক্ত করে নীলকুঠির সার্বিক উন্নয়ন করা হোক। নীলকুঠিকে সংস্কার করে জেলার পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করলে এলাকার উন্নতি হবে। নিজস্ব চিত্র।