নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: কসবাকাণ্ডের আবহে এবার নাবালিকাকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নেতা বীরনগর পুরসভার অস্থায়ী কর্মী এবং শহর তৃণমূল এসসি-ওবিসি সেলের সভাপতিও বটে। ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে তাহেরপুর থানার পুলিস। সোমবার তাকে রানাঘাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা দীপঙ্কর সরকার তাহেরপুর থানা এলাকার বীরনগরের বাসিন্দা। ঘটনাচক্রে সে নির্যাতিতার গৃহশিক্ষক। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালিকাকে প্রায় বছর তিনেক ধরে পড়াত দীপঙ্কর। নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ জুলাই অন্যান্য দিনের মতোই দীপঙ্কর সরকারের বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। অভিযোগ, ব্যাচের সকলকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার পর ওকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে যেতে বলে অভিযুক্ত। সবাই চলে গেলে ফাঁকা ঘরে নাবালিকার যৌন নিগ্রহ করে দীপঙ্কর। কোনওমতে নিজেকে বাঁচিয়ে দৌড়ে বাড়ি পালিয়ে আসে নাবালিকা। বাড়ি ফিরে দীপঙ্করের অত্যাচারের কথা পরিবারকে জানায় সে। নির্যাতিতার মা বলেন, আগেও ওই শিক্ষক অনেক পড়ুয়ার সঙ্গে এরকম আচরণ করেছেন বলে শুনেছি। আমার মেয়েকে ঘরে একা পেয়ে অশালীন কাজকর্ম করেছে সে। মেয়ে বাড়িতে এসে আমাকে কাঁদতে কাঁদতে পুরো ঘটনাটি বলে। কিন্তু প্রথমে আমরা পুলিসে যাওয়ার সাহস পাইনি। কারণ দীপঙ্কর রাজনীতি করে। তার প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতার কথা ভেবে চুপ করে গিয়েছিলাম। পরে আমার মেয়েই বলে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত। তাই পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছি।
এদিকে রবিবার তাহেরপুর থানায় ওই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। সঙ্গে সঙ্গেই সক্রিয় হয় পুলিস। অভিযোগ দায়ের হওয়ার তিনঘণ্টার মধ্যেই মধ্যেই দীপঙ্করকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বীরনগর শহরে তৃণমূলের একাংশ স্থানীয় নেতৃত্বের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা দীপঙ্করের। সেই সূত্রেই পুরসভার অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ পায় সে। বিজেপির তরফে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুজন বালা বলেন, কসবাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বীরনগরে। আমি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করব, তৃণমূল করে এমন লোককে দেখলেই ঝাঁটা হাতে তাড়া করুন। এরা সমস্ত কিছুর সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমরা এই ঘটনা জানার পর ৪ জুলাই ওই নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছি। আইন আইনের মতো চলবে। অনৈতিক কাজ করলে তৃণমূলে তার জায়গা নেই। • নিজস্ব চিত্র