• খড়গ্রামে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তা বেহাল, দুর্ভোগে প্রসূতি থেকে রোগীর পরিজন
    বর্তমান | ০৮ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: একটিই মাত্র রাস্তা। ওই রাস্তা পেরিয়ে যেতে হয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র সহ পুলিস ফাঁড়ি। কিন্তু প্রায় ২০০মিটার ওই বেহাল রাস্তার কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বাসিন্দারা। এমন অবস্থার জন্য বাসিন্দারা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন কংগ্রেস সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত বোর্ডকে। ঘটনাটি খড়গ্রাম ব্লকের ঝিল্লি পঞ্চায়েত এলাকার।

    স্থানীয় নোনাডাঙা গ্রামে রয়েছে ওই তিনটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে গ্রামের প্রধান রাস্তা থেকে ওই জায়গায় পৌঁছতে গেলে প্রায় ২০০ মিটার জলকাদার পিচ্ছিল রাস্তা পেরোতে হবে। তাতে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন প্রসুতিরা। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় ১০বছর ধরে এমন অবস্থা চলে আসছে। রাস্তাটির উপর কোনদিন পিচ বা পাথর পড়েনি। কোন কোন সময় মাটির রাস্তার উপর ইটের কুচি ফেলে দেওয়া হয় পঞ্চায়েত থেকে। তবে কিছুদিন যেতেই ফের উধাও হয়ে যায় ইটের কুচি।

    তবে এবছর বর্ষায় ভয়ানক চেহারা নিয়েছে রাস্তাটি। গোটা রাস্তায় কোথাও ইটের কুচির চিহ্ন পর্যন্ত নেই। সবটাই জলকাদায় ভর্তি। তাতে শুধুমাত্র চার চাকার ছোট গাড়ি আস্তে চলাচল করতে পারে। বাইক নিয়ে ঝুঁকির চলাচল হবে। স্থানীয় বাসিন্দা তহিদুল শেখ বলেন, রাস্তার যা অবস্থা খালি পায়ে হাঁটতে হয়। চপ্পল পরে হাঁটতে গেলে পাশের কৃষি জমিতে পড়তেই হবে। গোটা এলাকায় এতটা বাজে রাস্তা নেই। অথচ এটাই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।

    ওই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা প্রসুতি সুনিতা মার্জিত বলেন, রাস্তার যা অবস্থা তাতে একা আসার উপায় নেই। মা হাত ধরে এখানে নিয়ে এসেছেন। তবে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দ্রুত রাস্তার সংস্কার দরকার। ওই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মী লিপিকা চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই রাস্তায় অন্তঃসত্বা মহিলাদের চলাফেরা করা একেবারে বিপজ্জনক। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের বিপদ ঘটতে পারে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। খড়গ্রাম থানার এক অফিসার বলেন, রাস্তাটির দুরাবস্তার কথা প্রশাসনকে জানান হয়েছে। প্রশাসনকে বোঝান হয়েছে এলাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার এমন বেহালদশার কথা।

    এদিকে রাস্তার ওই বেহালদশার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করান হয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম পরিচালিত ঝিল্লি পঞ্চায়েত বোর্ডকে। এবারের পঞ্চায়েতে মোট ২১টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৯টি, সিপিএম ৩টি ও ১টি পেয়েছে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)। অন্যদিকে বিরোধী হিসেবে তৃণমূল পেয়েছে ৮টি আসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, নতুন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের পর থেকে এলাকার উন্নয়ন কার্যত থমকে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট থেকে নিকাশি ব্যবস্থা একেবারে বিপর্যস্ত। এমনকি পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই এনিয়ে ঝামেলা বেধে যায়। এবিষয়ে পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের বাহাদুর শেখ বলেন, এতটা বাজে পঞ্চায়েত কোথাও রয়েছে বলে মনে হয়না। পঞ্চায়েত বোর্ডের কাজ করার মানসিকতা রয়েছে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিরোধীদের মতামতকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই রাস্তার জন্য বারবার বলা হলেও কোন কাজ হয়নি। যদিও কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান শরিফা বিবি বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই রাস্তা নিয়ে পঞ্চায়েতে বোর্ড মিটিং করা হয়েছে। দ্রুত রাস্তার জন্য টেন্ডার করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)