• পুরুলিয়ায় জমিতে জল থইথই আমনের বীজতলা তৈরিতে ভোগান্তি
    বর্তমান | ০৮ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানবাজার: অন্য বছর এই সময় আমনের চারা সম্পূর্ণ তৈরি করে ফেলেন চাষিরা। জমিতে বীজ রোপণের কাজও শুরু হয়ে যায়। অথচ চলতি মরশুমে ধানের চারার অভাবে আটকে গিয়েছে রোয়ার কাজ। জল ভর্তি জমিতে বীজতলা তৈরি নিয়ে বিপাকে চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে সবে বীজতলা তৈরি করতে শুরু করা জেলার সিংহভাগ চাষিই ধান চাষ দেরিতে হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

    জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর মোট ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জেলায় সাধারণ বৃষ্টির পরিমাণ ৩২০.৩১ মিলিমিটার। এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৬৫৪.৫৫ মিলিমিটার অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে ১০৪.৩৫ শতাংশ বেশি। এতেই বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। বিগত কয়েক বছরে দেরিতে বৃষ্টির কারণে জেলায় আমন ধান রোপণের কাজ পিছিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এবার টানা বৃষ্টির কারণেই চাষের সময় পেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পুরুলিয়া জেলার ধান চাষিরা।

    পুরুলিয়া জেলার অধিকাংশ জমি এক ফসলি। বৃষ্টির উপরেই নির্ভর করে আমন চাষ। জেলার চাষিদের কথায়, এবার আষাঢ় মাসের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এই সময় তাঁরা বীজতলা তৈরির কাজ করেন। কিন্তু, টানা বৃষ্টিতে জমিতে জল থইথই করছে। এতেই বীজতলা তৈরিতে সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। তাঁদের কথায়, আমনের বীজ বপনের জন্য ঝুরঝুরে মাটি লাগে। কিন্তু, এবার সেই সুযোগ পাওয়া যায়নি। জেলার মানবাজার, বোরো, বান্দোয়ান, পুঞ্চা সহ একাধিক জায়গায় একইছবি। যেসব চাষিদের ধানের চারা পাঁচ থেকে ছ’ইঞ্চি লম্বা হয়ে গিয়েছে, তাঁদেরও ছত্রাকঘটিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। 

    কাদা জমিতে চাষিদের ভাষায় ‘আছাড়’ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করতে হচ্ছে। অনেক জায়গায় তাতেও সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না বলে চাষিরা জানান। ‘আছাড়’ পদ্ধতিতে বাড়িতে ধানবীজের অঙ্কুর হয়। তারপর সেই বীজ কাদা জমিতে বেড তৈরি করে ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

    মানবাজারের কৃষক বীরেন্দ্র মাহাত বলেন, সবে বীজতলা তৈরির জন্য জমিতে ধানবীজ ফেলেছি। তৈরি হতে মোটামুটি এক মাস লাগবে। এই সময় জমি ধান রোয়ার উপযুক্ত। কিন্তু, চারার অভাবে ধান চাষে দেরি হয়ে যাবে। আগে বৃষ্টি হয়েও লাভ হল না।

    জেলার উপকৃষি অধিকর্তা আদিত্য দুয়ারি জানান, চলতি মরশুমেস্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। জেলায় আমনের জন্য ৮০ শতাংশ বীজতলা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)