খড়্গপুরে প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে। তাই নিয়ে সাতদিন ধরে অনেক জল-ঘোলা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সমালোচনা করে অনেক আগেই অভিযুক্ত নেত্রীকে শোকজ করা হয়েছিল। এবার ঘটনার সাতদিন পর তাঁকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। সোমবার তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এই খবর জানিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে সাতদিন আগে। পাঁচিল ভাঙাকে কেন্দ্র করে প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাস এবং তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলের মধ্যে বিবাদ বাধে। প্রকাশ্যে প্রবীণ বাম নেতাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেছিলেন নেত্রী। এমনকি তাঁকে জুতোপেটা করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই বাম নেতা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই আবহেই জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশে তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলেকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, বাম নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ যা-ই থাক এভাবে প্রকাশ্যে মারধর করার অর্থ আইনকে নিজের হাতে তুলে নেওয়া।
এছাড়া অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রী ভুল স্বীকার তো করেননি উল্টে বাম নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাই দল তাঁকে বহিষ্কার করেছে। এবার পুলিশের কি ভূমিকা থাকবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এবার কি গ্রেপ্তার হতে পারেন বেবি কোলে? যদিও দলের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত নেত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। আগেই দলের মূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, দলের কোনো নেতা বা কর্মীর গুন্ডামি দল প্রশ্রয় দেবে না। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে এমন কোনও কাজ কেউ করলে দল কড়া পদক্ষেপ নেবে।
তবে বেবি কোলের বহিষ্কার নিয়েই সন্তুষ্ট নয় খড়্গপুরের নাগরিক সমাজ। আজ বড়বাতি থেকে খড়গপুর টাউন থানা অব্দি মিছিল করে টাউন থানার গেটের সামনে ধর্নায় বসা খড়গপুরের সাধারণ মানুষ সে কথা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। সিপিআই নেতা প্রবীর গুপ্ত বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলন আরো ভয়ংকর রূপ নেবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, দল তাদের কর্তব্য পালন করেছে। এবার প্রশাসনের পালা। প্রকাশ্য রাস্তায় ওই ধরনের নক্কারজনক ঘটনা ঘটার পরেও প্রশাসন কেন বেবি কোলেকে গ্রেপ্তার করছে না তার জবাব এবার প্রশাসনকেই দিতে হবে। পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, প্রশাসন কি করবে সেটা প্রশাসনের ব্যাপার। আমি কোনো মন্তব্য করব না।