কলেজে ধর্ষণ: তদন্তে সহযোগিতা করছেন না অভিযুক্তেরা, কোর্টে জানাল পুলিশ, চার জনেরই জেল হেফাজত
আনন্দবাজার | ০৮ জুলাই ২০২৫
কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় ধৃত চার জন তদন্তে সহযোগিতা করছেন না! মঙ্গলবার আদালতে এমনটাই জানাল পুলিশ। এই ঘটনায় কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্র, দুই বর্তমান ছাত্র এবং রক্ষীকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। ২২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকবেন তাঁরা।
কলেজ-কাণ্ডে ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে। তাঁদের আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানে বিচারক চার জনকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী সওয়াল করে জানান, এখনও ধৃতদের তিন দিন পুলিশি হেফাজতে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু তা নেওয়া হচ্ছে না। ফরেন্সিক-সহ বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরে প্রয়োজনে আবার পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হবে।
মূল অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করে জানান, তাঁর মক্কেলকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কোনও আইনজীবীকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। মক্কেলরা জানিয়েছেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নির্যাতিতার কল রেকর্ড সংগ্রহ করার দাবিও করেছেন তিনি। আদালতে আইনজীবী জানান, ঘটনার পর থেকে তার পরের দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নির্যাতিতার কল রেকর্ড সংগ্রহ করা হোক। তাঁর প্রশ্ন, তদন্তকারী অফিসার কেন তা সংগ্রহ করছেন না।
সরকারি আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করে জানান, পুলিশের নেওয়া বয়ান ‘অবৈধ’ হতে পারে না। এই ‘অপরাধে’ জড়িত কাউকে রেয়াত করা হবে না। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একাধিক নমুনা পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।
গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন কলেজের রক্ষীও। অভিযোগ, তাঁর ঘরেই নির্যাতন ঘটেছিল। ওই রক্ষীর আইনজীবী মঙ্গলবার আদালতে সওয়াল করে জানান, নিরাপত্তারক্ষী কলেজ পরিচালনা করেন না। যাঁরা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তাঁদের কী ভূমিকা ছিল? তদন্ত করে দেখা হোক, যে সেই সময়ে তাঁর মক্কেলকে ভয় দেখানো হয়েছিল কি না। অন্য দিকে নির্যাতিতার আইনজীবী পাল্টা রক্ষীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
অন্য দিকে, সরকারি আইনজীবী ধৃতদের জামিনের বিরোধিতা করেন আদালতে। তিনি সওয়াল করে জানান, জামিন পেলে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যেতে পারেন। প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। অভিযুক্তেরা তদন্তকারীদের সহায়তা করছেন না বলেও আদালতে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী। অভিযুক্ত চার জনকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।