• স্কুলে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি: কর্তৃপক্ষকে তলব করল সিডাব্লুসি
    বর্তমান | ০৯ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শহরের নামী বেসরকারি স্কুলে ক্লাসের মধ্যে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার প্রতিবাদে এবার সরব হলেন প্রাক্তনীরা। প্রিন্সিপালের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার স্কুলে ডেপুটেশন দেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, ক্লাসের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটায় স্কুলের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রীর পরিবারের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তুলেছেন প্রাক্তনীরা। এই ইস্যুতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে শহরের নাগরিক ও ছাত্র সমাজ। এদিন তারাও প্রাক্তনীদের সঙ্গে স্কুলে ডেপুটেশন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

    এদিকে, ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় এবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে তলব করল চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডাব্লুসি)। ১০ জুলাই তাদের সিডাব্লুসি’র সামনে হাজির হয়ে বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিয়েছিল, ওইদিন তার রিপোর্টও পেশ করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান মান্না মুখোপাধ্যায়।

    পুলিসের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। গত শুক্রবার জেলা শিশুসুরক্ষা আধিকারিক স্কুলে একপ্রস্থ তদন্ত সেরে গিয়েছেন। এদিনও প্রশাসনের আধিকারিকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। ক্লাসে ‘যৌন হেনস্তা’র শিকার হওয়া ছাত্রীর সঙ্গে সোমবারই কথা বলেছেন সিডাব্লুসি’র কর্তারা। এবার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চান তাঁরা। সেকারণেই তলব করা হয়েছে।

    সহপাঠী ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় অষ্টম শ্রেণির অভিযুক্ত ছাত্র বর্তমানে হোমে। এদিন থেকে তার কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। আগামী শুক্রবার ফের ওই ছাত্রকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে পেশ করা হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সেদিনই।

    ক্লাসের মধ্যে এতবড় ঘটনা ঘটে গেলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে নারাজ। পুলিস-প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়েরের পর ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে স্কুলের তরফে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় ওই ছাত্রী এখন স্কুলে যেতে পারছে না। এদিন ছাত্রীর মা বলেন, গত ২৩ জুন ঘটনাটি 

    ঘটেছে। স্কুলের পক্ষ থেকে কোনওরকম পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে পুলিস-প্রশাসনের দ্বারস্থ হই। তাঁর দাবি, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল আমার মেয়ের প্রতি কোনওরকম সহানুভূতি দেখায়নি। উল্টে আমাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে প্রিন্সিপাল শাসিয়েছেন।

    এদিন নাগরিক ও ছাত্র সমাজকে নিয়ে স্কুলের প্রিন্সিপালের হাতেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে স্মারকলিপি তুলে দেন প্রাক্তনীরা। তাঁদের দাবি, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ছাত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সেকারণে স্কুলের তরফে তার এবং অন্য পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ছাত্রী ও তার পরিবারকে স্কুল যাতে চাপ না  দেয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বারবার চেষ্টা করেও এনিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)