সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তপনের একাংশ পরিযায়ী শ্রমিক
বর্তমান | ০৯ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, তপন: শ্রমিক পোর্টালে নাম না থাকায় সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তপনের বহু পরিযায়ী শ্রমিক। প্রতি বছর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের বহু যুবক কাজের সন্ধানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন।
কেউ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে, কেউ ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। কিন্তু তাঁদের অনেকেরই নাম নেই রাজ্য সরকারের পরিযায়ী শ্রমিক পোর্টালে। ফলে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটলে বা অন্য কোনও বিপদের সময় সরকারি প্রকল্প অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। সম্প্রতি তপনের পারিলা কাশীকুড়ি গ্রামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় এমনই চিত্র সামনে এসেছে।
২৪ বছর বয়সি শুভদীপ সরকার পাঁচ বছর ধরে তেলেঙ্গানায় একটি কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। গত ৩০ জুন সেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভদীপের নাম শ্রমিক পোর্টালে নথিভুক্ত ছিল না। ফলে সরকারের তরফে যে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা, তা থেকেও বঞ্চিত হতে চলেছে তাঁর পরিবার।
পরিযায়ী শ্রমিক পোর্টাল করোনা কালে লকডাউনের পরে চালু হয়েছে। উদ্দেশ্য ভিনরাজ্যে কর্মরত শ্রমিকদের তথ্য এক জায়গায় সংরক্ষণ করা এবং বিপদের সময় দ্রুত সহায়তা প্রদান। এই পোর্টালে নাম থাকলে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে পরিবার দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা ও মরদেহ পরিবহণের জন্য ২৫ হাজার টাকা পায়। কিন্তু সচেতনতার অভাব, অজ্ঞতা বা তথ্যের অভাবে এখনও বহু শ্রমিক এই পোর্টালে নাম তোলেননি। তপন ব্লকের চিত্রটিও ব্যতিক্রম নয়। পারিলা থেকে সালাস, শিবরামপুর থেকে হরসুরা, প্রতিটি এলাকা থেকেই প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক ভিনরাজ্যে যান। কিন্তু তাঁদের অনেকে জানেন না যে সরকার এধরনের পোর্টাল তৈরি করেছে, বা কীভাবে নাম তোলা যায়। ফলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে পরিবারগুলি চরম সমস্যায় পড়ে যায়।
তপন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণা বর্মন বলেন, সচেতনতার অভাবই বড় সমস্যা। অনেকে জানেনই না এই পোর্টালের কথা। তবে আমরা প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। দুয়ারে সরকার-এর মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছ থেকে ফর্ম নেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে সবাইকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এনিয়ে তপনের বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষকে ফোন ও মেসেজ করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি।