ইউনুস সরকারের অত্যাচারে দেশছাড়া, সীমান্ত পেরিয়ে ধৃত আওয়ামি লিগ নেতা
বর্তমান | ০৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: অশান্ত বাংলাদেশ থেকে ক্রমাগত ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত। কখনও সাধারণ মানুষ ঢুকছে বা ঢোকার চেষ্টা করছেন। কখনও আবার আওয়ামি লিগ নেতারা চলে আসছেন। ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের সন্ত্রাসে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন শেখ হাসিনার দলের নেতা, কর্মীরা। মূলত, প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কায় নিজ ভূমে দিশেহারা তাঁরা। তাই, বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন অনেকেই। সোমবার রাতে রানিতলা সীমান্ত দিয়ে চুপিসারে ভারতে ঢুকে পড়লেও শেষরক্ষা হয়নি এক আওয়ামি নেতার। পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। খবরটি চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় জেলাজুড়ে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম, মহম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি পাবনা সদর থানার কাছারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আওয়ামি লিগের জেলা পরিষদের প্রার্থী ছিলেন নজরুল। ধৃতকে মঙ্গলবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিস তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (লালবাগ) রাসপ্রিত সিং বলেন, ‘অনুপ্রবেশের অপরাধে আমরা বাংলাদেশের এক নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি পাবনা সদর থানা এলাকার বাসিন্দা। অনুপ্রবেশের পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা জানতে আমরা ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গোটা দেশজুড়ে আওয়ামি লিগের নেতাকর্মীদের উপর প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু হয়েছে। নজরুল ইসলামও চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হন। প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে আসেন তিনি। পুলিসের কাছে তার দাবি, ‘এলাকায় থাকলে আমাকে ওরা মেরে ফেলত। তাই প্রাণে বাঁচতেই ভারতে আশ্রয় নিতে এসেছিলাম।’
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পেরোনোর পর হরিরামপুর ঘাট এলাকায় নজরুল ঘোরাঘুরি করছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রানিতলা থানার পুলিস আধিকারিকরা অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। সীমান্তে বিএসএফের পাহারা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নজরুল জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঢুকে পড়লেন, তা নিয়েই উদ্বেগ ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
স্থানীয় থানার এক পুলিস আধিকারিক বলেন, আমরা সীমান্তবর্তী এলাকায় অত্যন্ত কড়া নজরদারি চালাচ্ছি। বাংলাদেশ থেকে কেউ বেআইনিভাবে করলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করতে পারছি। কোনওভাবেই অনুপ্রবেশ বরদাস্ত করা হবে না। পাশাপাশি, চোরাচালানকারীদের রেয়াত করা হচ্ছে না। এদিন যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বেশ কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। সেগুলিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সীমান্ত দিয়ে যেভাবে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঘটছে তাতে আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন। এ ভাবেই বিভিন্ন সময় চোরাচালানকারীরা এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করে। পুলিস এবং বিএসএফের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।