• প্রাথমিকে ফেরার হিড়িক চাকরিহারা শিক্ষকদের, জমা ১২৫টি আবেদন
    বর্তমান | ০৯ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: চাকরিহারা শিক্ষকদের তাঁদের পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফেরার হিড়িক লেগেছে। অনেকেই তাঁদের পুরনো স্কুলে ফিরতে চাইছেন। শতাধিক আবেদন জমা পড়ছে পর্ষদ ও জেলার প্রাথমিক সংসদের কাছে। এখনও পর্যন্ত চাকরি হারানো ১২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে চেয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, চাকরিহারারা চাইলে নিজের পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারেন। তাই তাঁদের আবেদনপত্র নদীয়া জেলার ডিপিএসসি গ্রহণ করেছে। যদিও তাঁদের কখন পুরনো কাজে ফেরানো হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রশাসনের আধিকারিকরা মনে করছেন, শিক্ষকরা যদি নিজের পুরোনো কর্মস্থলে ফিরে যান, তাহলে গ্রামীণ এলাকার বহু স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে। বর্তমানে নদীয়া জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রায় দুশো শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। কারণ, বিগত বছরগুলোতে জেলার বহু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক পরীক্ষা দিয়ে সেকেন্ডারি স্কুলে যোগ পেয়েছিলেন। সেই স্থানগুলো শূন্যই থেকে গিয়েছে।

    নদীয়া জেলার ডিপিএসসি’র চেয়ারম্যান দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, অনেকেই নিজেদের পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে চাইছেন। বিষয়টি আমরা বোর্ডকে জানিয়েছি। বোর্ড আমাদের আবেদনপত্র গ্রহণ করতে বলেছে। যখন নির্দেশ আসবে, আমার সেই সমস্ত শিক্ষকদের জয়েন করাব। এর ফলে প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষকের যে ঘাটতি রয়েছে, তা অনেকটাই পূরণ করা যাবে। 

    সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের পর, রাজ্যজুড়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী কাজ হারিয়েছেন। এর প্রবল অভিঘাত পড়েছে নদীয়া জেলাতেও। জেলাতে ন’শোরও বেশি শিক্ষক-কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন, যার ফলে নদীয়ার প্রায় তিনশো স্কুলের পঠনপাঠন বিঘ্নিত হয়েছে। ২০১৬ সালের প্রথম স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট অনুযায়ী নদীয়া জেলায় নবম-দশম শ্রেণিতে ৬৩৬ জন শিক্ষক, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ১৯৭ জন শিক্ষক এবং গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি›তে ৭৩ জন অশিক্ষক কর্মী চাকরিচ্যুত হয়েছেন।‌ যদিও বর্তমানে শিক্ষকরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত পড়ানো চালিয়ে যেতে পারবেন। বিশেষভাবে উদ্বেগের বিষয়, চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের মধ্যে বড় অংশই বিজ্ঞান বিভাগের। 

    পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক কিংশুক দাস বলেন, এটা শিক্ষকদের রুজিরুটির বিষয়। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ রয়েছে। তাই কোনও ইচ্ছুক শিক্ষক তাঁর পুরনো স্কুলের ফিরতে চাইলে, তাতে সমস্যার কিছু নেই‌। এর ফলে প্রাথমিক স্কুলের পঠনপাঠন ভালো হবে। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির শিক্ষক সেলের কনভেনার অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যজুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার এই অচলাবস্থার জন্য একমাত্র তৃণমূল সরকার দায়ী। বহু স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। তৃণমূলের নেতাদের চাকরি চুরির জন্য সমাজের প্রতিটা স্তরের মানুষকে ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)