• গৌরাঙ্গ সেতুর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কাজ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু, টেন্ডার এবং ওয়ার্ক অর্ডার সম্পন্ন
    বর্তমান | ০৯ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতুর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কাজ আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হচ্ছে। অক্টোবর মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে টেন্ডার হয়ে ওয়ার্ক অর্ডার বেরিয়ে গিয়েছে। ওই সেতুর আগাগোড়া সমস্ত পুরনো বেয়ারিং পরিবর্তন করে নতুন ২৮টি বেয়ারিং লাগানো হবে বলে জেলা পূর্তদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। বেয়ারিংগুলির নকশা তৈরির কাজ চলছে, দ্রুত ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু হবে। গোটা সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে সেতু সারাইয়ের এই কাজ চলবে। এজন্য আংশিকভাবে যান নিয়ন্ত্রণ করা হলেও হতে পারে। এই কাজের জন্যে খরচ হবে প্রায় এক কোটি  টাকা।

    নদীয়া হাইওয়ে ডিভিশন-১ এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বুলবুল ইসলাম বলেন, এই বেয়ারিং লাগানোর কাজ সফলভাবে শেষ হলে তখন যে কোনও গাড়ি নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে। তখন আর যানের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার দরকার হবে না। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বেয়ারিং লাগানোর কাজ শুরু হবে। আশা করি অক্টোবরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

    ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর সকালে আচমকাই গৌরাঙ্গ সেতুর মাঝামাঝি অংশের নীচে বেয়ারিং ভেঙে যায়। আর এর ফলে দু’টি স্ল্যাবের সংযোগস্থলে ফিঙ্গার এক্সপ্যানশন জয়েন্ট প্রায় এক থেকে দেড় ইঞ্চি উঁচুনিচু হয়ে যায়। যে অংশটা বসে গিয়েছিল সেটাকে নীচ থেকে জ্যাক দিয়ে তুলে নীচের সরে যাওয়া রোলার বেয়ারিংকে ঠিক জায়গায় নিয়ে আসা হয়। গত বছর অক্টোবর মাসে আবারও দু’টি স্ল্যাবের সংযোগস্থলে ফিঙ্গার এক্সপ্যানশন জয়েন্টের প্লেট সরে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটে। তখন সেতুর একটা পাশ দিয়ে সব ধরনের গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হয়েছিল। তারপর গত অক্টোবরের মাঝামাঝি পূর্তদপ্তর ব্রিজ মেরামতির প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ অল্প সময়ের মধ্যে অস্থায়ীভাবে শেষ করে। এরপর থেকে ১৯ টন পর্যন্ত ওজন বহন করতে পারে এমন যান চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সময়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্রিজ পরীক্ষা করা হয়। গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে আবার বিশেষ নজর দেওয়া হয়।

    নবদ্বীপের এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেন না, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের সংযোগ রক্ষা করে এই সেতু। এই সেতু দিয়ে ছোট বড় মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। নদীয়া, মুর্শিদাবাদ এবং বর্ধমান জেলা সহ অন্যান্য জেলার সঙ্গে সংযোগকারী এই সেতু। সেতুটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, বহরমপুর এবং দক্ষিণেশ্বর ছাড়া গঙ্গার ওপর আর কোনও ব্রিজ নেই। তবে তার মাঝে কল্যাণী ঈশ্বর গুপ্ত সেতু আছে। সেটিরও কাজ চলছে। 

    ১৯৭২ সালে নবদ্বীপের গৌরাঙ্গ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। ১৯৮২ সালে গৌরাঙ্গ সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। সেতুটি প্রায় ৫৮০ মিটার লম্বা আর চওড়ায় প্রায় ৭ মিটার।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)