নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন স্ত্রী। স্ত্রীর প্রেমিকের পরিচয় জানার পর তাঁকে সতর্ক করেছিলেন স্বামী। কিন্তু, প্রেমিককে ছাড়তে নারাজ স্ত্রী। উল্টে, স্বামীর কাছে ডিভোর্স চেয়েছিলেন তিনি। সেই রাগেই মঙ্গলবার সল্টলেকে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁসুয়া দিয়ে স্ত্রীর ‘প্রেমিক’কে কোপালেন স্বামী। রক্তাক্ত হলেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন প্রেমিক। তাঁকে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে, খুনের চেষ্টার অভিযোগে স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিস। প্রকাশ্য রাস্তায় এহেন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক শোরগোল ছড়িয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম শ্রীকান্ত হাজরা। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম এলাকায়। সল্টলেকের সি জে ব্লকের একটি বাড়িতে তিনি কেয়ারটেকারের কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী একইসঙ্গে থাকতেন। জখম প্রেমিকের নাম সুরেশ পাত্র। ঝাড়গ্রাম জেলায় তাঁর বাড়ি। তিনি বাগুইআটির কেষ্টপুরে ভাড়া থাকেন। সল্টলেকের বি জে ব্লকের একটি দোকানে কাজ করেন তিনি। সেই সুবাদে শ্রীকান্তর সঙ্গে সুরেশের পরিচয়। বন্ধুত্বও তৈরি হয়েছিল। পরে সুরেশের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন শ্রীকান্তর স্ত্রী। কয়েকদিন আগে শ্রীকান্ত তা জানতে পারে। তা নিয়ে স্ত্রীকে তিনি সতর্ক করেন। গত সোমবারও স্ত্রীকে বারণ করলে তিনি ডিভোর্স চেয়ে বসেন।
তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, সোমবারই সুরেশকে খুন করার পরিকল্পনা করে শ্রীকান্ত। তার জন্য ওইদিন বাগুইআটিতে গিয়ে হাঁসুয়া কেনেন। যে দোকান থেকে কিনেছিলেন, সেই দোকানদারকে বলেছিলেন, ‘গাছ কাটব’। মঙ্গলবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ সুরেশ সল্টলেকের দোকানে কাজে যাওয়ার সময় আচমকা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন শ্রীকান্ত। সেই সময় মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল। সুরেশের মাথায় ছাতা ছিল। তাই পিছন থেকে কেউ আসছেন, তা টের পাননি তিনি। হাঁসুয়ার কোপে সুরেশের দুই হাত রক্তাক্ত হয়। বাঁ পায়েও আঘাত লেগেছে। কপাল জোরে গলা, মাথায় কোপ লাগেনি। ঘটনাস্থল থেকে শ্রীকান্ত পালানোর চেষ্টা করে। তবে, খবর পেয়ে পুলিস পৌঁছে যায় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সুরেশকে প্রথমে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ধৃত পুলিসকে জানিয়েছেন, স্ত্রী ডিভোর্স চাইতেই মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। তাই সুরেশকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলাম। পুলিস জানিয়েছে, হাঁসুয়াটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যে দোকান থেকে কিনেছিলেন, সেই দোকানটিও চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। সুরেশের এক আত্মীয় অভিযোগ করেছেন, তাঁরাও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতেন।