ভিআইপি রোড যেন সমুদ্র! গাড়ি গেলে দু’ধারে আছড়ে পড়ল ঢেউ
বর্তমান | ০৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: গোটা রাস্তা জল থই থই। জলের নীচে যে একটি রাস্তা আছে তা খালি চোখে দেখে বোঝাই যাচ্ছে না। যতদূর চোখ যায় শুধুই জল। সেই জল ঠেলেই চলছে যানবাহন। তখন বোঝা যাচ্ছে জলের তলায় রয়েছে রাজপথ। গাড়ি গেলে দস্তুরমতো স্রোত। সার্ভিস রোডের দু’পাশে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। সেই প্রায় কোমর সমান জলে দাঁড়িয়ে মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরা খুললেন এক ব্যক্তি। আর মজা করে গেয়ে উঠলেন, ‘আমার মন বসে না শহরে..., তাই তো আইলাম সাগরে...।’ মঙ্গলবার জল-যন্ত্রণা যেমন কষ্ট দিল তেমনই এমন কিছু কৌতুক উপহার দিল ভিআইপি রোডে। তবে চিনার পার্কের অদূরে ভিআইপি’র উপর জমা জলের কারণে দিনভর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হল মানুষকে।
ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, কলকাতা বা শহরতলির জল জমার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য জায়গা দখল করেছে কৈখালির এই এলাকা। বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। আর চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় হাজার হাজার মানুষকে। কারণ ভিআইপি রোড শহরের অন্যতম ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। মঙ্গলবার সকাল থেকে ও তার আগে রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। তার হাত ধরে হাঁটু ছাড়িয়ে জল ভিআইপি রোডে। মূল রাস্তার দু’পাশে সার্ভিস রোডও জল থইথই। ফলে বাইক ও পথচারীরা বেনজির দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। বহু বাইক চলতে চলতে থেমে গিয়েছে। কোনওক্রমে ঠেলে ঠেলে নিয়ে যেতে হয়েছে সেগুলিকে। জমা জলের জেরে চারচাকা গাড়ির গতি কম ছিল। ফলে তৈরি হয়েছে যানজট। বাসে বা গাড়িতে লেগেছে দীর্ঘ সময়। বহু মানুষের অভিযোগ, সময়ে অফিস পৌঁছতে পারেননি তাঁরা। চিনারপার্কের মুখেও জলযন্ত্রণার একই ছবি। চিংড়িঘাটা সহ নিউটাউন, সল্টলেক, সেক্টর ফাইভের বহু এলাকায় সাময়িক সময়ের জন্য জল জমেছিল বলে অভিযোগ। তবে প্রশাসনের দাবি, সকালের পর তা নেমে যায়। বিধাননগর পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াবেড়ি দক্ষিণপাড়া মাঠ এলাকায় জমা জলের জেরে দুর্ভোগে পড়েন বহু মানুষ। হাঁটু সমান জলে পা দিয়ে দিনভর কাটাতে হয়েছে বাসিন্দাদের।
অন্যদিকে, বৃষ্টির জেরে কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে কয়েকটি জায়গায় জল জমার ছবি দেখা গিয়েছে। তবে তার জন্য বিমান ওঠা-নামায় প্রভাব পড়েনি। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতো নির্দিষ্ট সময়েই চলেছে বিমান। কিন্তু কৈখালি, এয়ারপোর্ট এক নম্বর গেট সংলগ্ন অংশে জল জমে থাকার ফলে বিমানবন্দরে প্রবেশের মুখে সমস্যায় পড়তে হয়েছে বিমানযাত্রীদের। বিমান সংস্থাগুলি আগে থেকেই যাত্রীদের কাছে বার্তা পাঠিয়ে রাস্তায় যানজটের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছিল বলে খবর। বহু মানুষ হাতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে যেখানে জল জমেছিল, তা দ্রুত সরাতে ছ’টি হাই পাওয়ার পাম্প ব্যবহার করা হয় বলে জানা গিয়েছে। নিজস্ব চিত্র