অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও সাত বছরের শিশুপুত্র-সহ বীরভূমের পরিযায়ী শ্রমিক দানিশ শেখকে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’-এর অভিযোগ ছিলই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। ফের বীরভূমের তিন জনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানোয় অভিযুক্ত তারা।
দিল্লিতে কর্মরত মুরারইয়ের বাসিন্দা সুইটি বিবি, ও তাঁর দুই নাবালক ছেলেকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। সোমবার মুরারই থানায় বিষয়টি জানান সুইটির আত্মীয়েরা। রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম মঙ্গলবার বলেন, ‘‘যেন মগের মুলুক হয়ে উঠেছে। আমরা দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
রবিবারই দিল্লিতে কর্মরত বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক দানিশ শেখ, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও বছর সাতেকের পুত্রসন্তানকে ‘পুশ ব্যাক’ করে বাংলাদেশে পাঠানোর ঘটনা সামনে আসে। তাঁদের শিশুকন্যা গ্রামের বাড়িতে থাকায় তাকে দেশ ছাড়তে হয়নি। এ বার মুরারইয়ের ধীতোড়া গ্রামের বাসিন্দা সুইটি বিবি, তাঁর সতেরো ও ছ’বছরের দুই ছেলে ও শাশুড়ি আর্জেলা বিবিকে বাংলাদেশে পাঠানোয় অভিযুক্ত দিল্লি পুলিশ।
২০ জুন দিল্লি পুলিশ শাহবাদ এলাকা থেকে বাংলাদেশি সন্দেহে সুইটি ও দুই ছেলেকে আটক করে। ৩০ জুন তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়। সুইটির মা লাজিনা বিবি জানান, প্রায় কুড়ি বছর ধরে দিল্লিতে তাঁর মেয়ে কাগজ কুড়োনোর কাজ করছেন। সুইটির স্বামী চার বছর নিখোঁজ। লাজিনা মেয়ের সঙ্গে থাকতেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বার বার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু কাউকে ছাড়েনি। পরে জেনেছি, বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।’’ সম্প্রতি দেশের একাধিক রাজ্যে বাংলা থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একাধিক শ্রমিককে ফিরিয়েছে রাজ্য সরকার। রবিবারই গুজরাতে বোলপুরের এক শ্রমিককে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে সে রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে।
সামিরুলের ক্ষোভ, ‘‘বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে এই অত্যাচার মানা যায় না। আমরা চাই, কেন্দ্র সরকারের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশে জোর করে পাঠানো বাঙালিদের অবিলম্বে ফেরানোর ব্যবস্থা হোক।’’