• স্কুল চত্বরে পথকুকুরকে পিটিয়ে হত্যা, প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বেই হাড়হিম কাণ্ড নদিয়ায়...
    আজকাল | ০৯ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুল চত্বরে পথকুকুরকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর। ঘটনাটি ঘিরে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি। 

    জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার গয়েশপুরে। একটি পথকুকু্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন গয়েশপুর নেতাজি বিদ্যাপীঠ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ আরও চারজন সহকারী শিক্ষক ও ছাত্ররা। 

    পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে গত ৮ জুলাই। দুপুর প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ। অভিযোগ, স্কুল চলাকালীন বিদ্যালয় চত্বরে একটি নিরীহ সারমেয়কে গাছের মোটা ডাল, কাঠ ও অন্যান্য ভারী বস্তু দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

    স্থানীয় পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়িতে পৌঁছে প্রধান শিক্ষকসহ মোট পাঁচজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের দাবি, এই বর্বর ঘটনায় অ্যানিম্যাল অ্যাক্ট, ১৯৬০ অনুসারে অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে হবে। মৃত সারমেয়টির দেহ ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর পাঠানো হয়েছে।

    ঘটনার তদন্তে নেমেছে কল্যাণী থানার পুলিশ। গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রাপ্ত ভিডিও ও চাক্ষুষ তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির পাশাপাশি প্রাণী সুরক্ষা আইনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    এদিকে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, 'সেই সারমেয়টি দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের আশেপাশে ঘুরে বেড়াত। কিছুদিন ধরে তার আচরণ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। আমরা পুরসভা, প্রশাসন এবং অন্যান্য দপ্তরে জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ পাইনি। গতকাল একাধিক শিক্ষক ও ছাত্রকে কামড়ে দেয় সে। এরপর আমরা তাড়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু পাশের পাড়ার কিছু লোক এসে সারমেয়টিকে মারধর করে। স্কুল কর্তৃপক্ষ এভাবে মারধরকে সমর্থন করে না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।' 

    এই ঘটনার জেরে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। প্রাণী অধিকার কর্মীরা বলছেন, 'একটি অবলা প্রাণীকে এইভাবে হত্যা করা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।' ঘটনার জেরে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ স্কুলের নিরাপত্তার কথা বললেও অধিকাংশই এই অমানবিক ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।
  • Link to this news (আজকাল)