• নানুরে পুলিশের সামনেই দাদাগিরি TMC কর্মীদের, বামেদের প্রাক্তন মহিলা বিধায়ককে মারধর
    আজ তক | ০৯ জুলাই ২০২৫
  •  কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি এবং পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আজ দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন ও শিল্পভিত্তিক ফেডারেশন। আর এই  ধর্মঘট চলাকালীন পুলিশের সামনেই নানুরে সিপিআইএমের প্রাক্তন মহিলা বিধায়ক ও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠল কাজল শেখ অনুগামী তৃণমূল কর্মীদের দিকে৷ অন্যদিকে, রামপুরহাট স্টেশনে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি  হয় সিপিআইএম কর্মীদের ৷ বোলপুর বাসস্ট্যান্ডে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সিউড়ি, লোহাপুর, রামপুরহাটে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলে ধর্মঘট। ধর্মঘটের জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় স্বাভাবিক যান চলাচল।

    শ্রমকোডের বিরোধিতা-সহ আরও কয়েকটি দাবিকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলির ডাকে সারা ভারতজুড়ে  বুধবার  পালিত সাধারণ ধর্মঘট ৷ শ্রম আইনের বদলে চারটি শ্রম কোড প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, দ্রুত এই সমস্ত শ্রমিক বিরোধী লেবার কোড লাগু করার চেষ্টা করছে সরকার । এই কোড লাগু হলে শ্রমিকদের কাজের সময় বৃদ্ধি পাবে ৷ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার খর্ব হবে। এছাড়াও, উপ-নির্বাচনে কালীগঞ্জে বোমা মেরে কিশোরীকে হত্যা ও  কসবায় আইনের ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় বামেদের ধর্মঘট।

    এদিন সকাল থেকে বীরভূম জেলাজুড়ে কখনও মাঝারি, কখনও ভারি বৃষ্টি হয় ৷ বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দিকে দিকে শুরু হয় বামেদের ধর্মঘট। এদিন নানুরে ধর্মঘট চলাকালীন চড়াও হয় তৃণমূল সমর্থকরা ৷ পুলিশের সামনেই নানুরের প্রাক্তন মহিলা বিধায়ক শ্যামলী প্রধানকে হেনস্তা করে ৷ বাধা দিতে গেলে কীর্ণাহারের এরিয়া কমিটির সম্পাদক আসগর আলিকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ৷ গুরুত্বর জখম অবস্থায় তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের সামনেই সিপিএমের পতাকা ছিড়ে  তাণ্ডব চালায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফায়জুল হক ওরফে কাজল শেখের অনুগামীরা ৷

    অন্যদিকে, ধর্মঘটের সমর্থনে রামপুরহাট রেল স্টেশনে জমায়েত হন বাম নেতা-কর্মীরা। বাঁধা দিলে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয় ৷ পরে রামপুরহাটে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। একই ভাবে বোলপুরে জামবুনী বাসস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। বন্ধ করে দেওয়া হয় বাস চলাচল। সিউড়ির রাস্তায় ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল করে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি৷ রামপুরহাটে পিএসসি স্লিপার ফ্যাক্টারির গেট বন্ধ করে দিয়ে চলে বিক্ষোভ। কাজে যোগ দেননি শ্রমিকেরা৷ একই ভাবে লহাপুরের কাঁটাগড়িয়া মোরেও ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। সকাল থেকে বীরভূম ময়ূরেশ্বর ও মল্লারপুরে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়৷ সব মিলিয়ে বামেদের ডাকা ধর্মঘটে বীরভূমে ব্যাহত স্বাভাবিক যান চলাচল। আর এর দোসর ছিল দিনভর বৃষ্টি।

    সিপিআইএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, 'শ্রমিক-কৃষকদের কথা ভাবছে না কেন্দ্রীয় সরকার৷ সব ক্ষেত্রে বঞ্চনা আর শোষণ৷ অন্যদিকে, এই রাজ্যে কী চলছে? প্রাণে শেষ করা, শারীরিক নির্যাতন, নিয়োগ দুর্নীতি। এই সবের বিরুদ্ধে আজ সাধারণ মানুষ এক জোট হয়েছে। তাই বীরভূমে ধর্মঘট সফল।'

    সংবাদদাতা: শান্তনু হাজরা
  • Link to this news (আজ তক)