• ধর্মপ্রচারকের বেশে পাক চর! ওটিপির মাধ্যমে তথ্য পাচার, গুপ্তচর গ্রেপ্তারি কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য
    প্রতিদিন | ০৯ জুলাই ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার, বর্ধমান: স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে ঘুরে ঘুরে একটি ধর্মের প্রচার ও ধর্মান্তরকরণের কাজ করত। আর কাজের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছিল পাক গুপ্তচর বৃত্তি। ভারতীয় সিমকার্ড জোগাড় করে পাক এজেন্টদের তুলে দিয়েছিল। পাশাপাশি, সিমকার্ডের মাধ্যমে ওটিপি পাঠানোর মাধ্যমে তথ্য পাচার করত। সেই অপারেশন সিঁদুর চলার সময় থেকেই চলছিল গুপ্তচরবৃত্তি। সেই সময় থেকেই রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের নজরে ছিল পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ের ক্যানাল পাড়ের এক বাসিন্দা। নজরদারি চালিয়ে তার এক সঙ্গীর কথাও জানতে পারে এসটিএফ।

    শনিবার গভীর রাত তথা রবিবার খুব ভোরে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ও বর্ধমান শহরে অভিযান চালিয়ে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে এসটিএফ। ধৃতরা হল মুকেশ রজক ও রাকেশকুমার গুপ্তা। সোমবার তাদের কলকাতায় আদালতে পেশ করে সাতদিনের হেফাজতে নিয়েছে এসটিএফ। এই চক্রে আরও কয়েকজন রয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। তাদের সন্ধানে এসটিএফ।

    সূত্রের খবর, মুকেশ রজকের বাড়ি পানাগড়ে। কাছেই রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটি। অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন মুকেশের গতিবিধির উপর নজরদারি শুরু করে এসটিএফ। সেই সূত্রে কলকতার ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের বাসিন্দা মুকেশের কথা জানতে পারে। তারা দুইজনই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ধর্ম প্রচার ও ধর্মান্তরকরণের কাজ করত। আর এর আড়ালেই চালাচ্ছিল গুপ্তচর বৃত্তি। মাস ছয়েক আগে তারা মেমারি পুরসভা এলাকায় ঘরভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। শনিবার রাতে সেখানেই হানা দেয় এসটিএফ। রাকেশকে ধরে। কিন্তু সেখানে ছিল না মুকেশ। রাকেশকে নিয়ে ওইদিন রাতেই বর্ধমানের নবাবহাট এলাকায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে হানা দিয়ে মুকেশকে গ্রেপ্তার করে। অসুস্থতার কারণে সেখানে ভর্তি ছিল মুকেশ। দুজনকেই ওইদিন ভোরে কলকাতা নিয়ে যায় এসটিএফ।

    যদিও ধৃতরা দাবি করেছে, তারা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে মোবাইলের সিমকার্ডের তথ্য ও ওটিপির মাধ্যমে দিল্লি ও মুম্বইয়ের কয়েকজনকে তথ্য পাঠাত। তারা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত কি না সেটা তারে জানে না। তবে এসটিএফ তাদের দাবি বিশ্বাসযোগ্য মনে করছে না। তথ্যের বিনিময়ে মোটা টাকা পেত এরা। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাকাউন্টেও মোটা টাকা লেনদেনের খবর মিলেছে। এসটিএফ সবকিছু খতিয়ে দেখছে। সূত্রের খবর, প্রায় তিনবছর ধরে ধৃতরা এই ধরনের কাজে যুক্ত। তবে চলতি বছরের গোড়ার দিক থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ডেরা বেঁধেছিল তারা। এসটিএফ ধৃতদের মোবাইল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাকাউন্ট ও নথিপত্র খতিয়ে দেখছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আর কারা জড়িত রয়েছে তাদের সন্ধান পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল পড়েছে এলাকায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)