আটকে রাখা হয়েছিল মহেশতলাতেই, জানলা খোলা পেয়ে ৪২ দিন পর বাড়ি ফিরল আক্রায় ‘অপহৃত’ নাবালক
প্রতিদিন | ১০ জুলাই ২০২৫
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ৪২ দিন পর বাড়ি ফিরল সন্তোষপুর আক্রায় কারখানায় অত্যাচারিত নাবালক। অভিযোগ, এতদিন আক্রার একটি বাড়িতে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। আটকে রেখেছিল কারখানার এক কর্মী। বুধবার সন্ধেয় ইসলামপুরে নিজের বাড়িতে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়।
২৮ মে থেকে নিখোঁজ ছিল ওই নাবালক। মহেশতলার জিনসের ধোলাই কারখানায় উলটো করে ঝুলিয়ে বিদ্যুত শক দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। কিশোর জানিয়েছে, আক্রার একটি বাড়িতে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। কোনওমতে জানলা খুলে পালিয়ে আসে সে। স্থানীয় স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে প্রথমে শিয়ালদহ, সেখান থেকে দূরপাল্লার ট্রেনে চেপে এদিন ভোরে কিষানগঞ্জ নামে। তারপর প্রায় ৩০ কিলোমিটার হেঁটে বিকেল চারটেয় মাটিগুন্ডা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পৌঁছয়। তারপর গ্রামের কারও সাইকেলে চেপে বাড়ি এসে ঢোকে। এ প্রসঙ্গে ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস জানান, ফিরে আসা নাবালককে ইসলামপুর থানা সেফ কাস্টডিতে রাখা হবে। রবীন্দ্রপুর থানার পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। শিশু কমিশনকেও খবর দেওয়া হবে। তার মানসিক অবস্থার পরীক্ষা করা হবে। তারপর বোঝা যাবে সে কী কারণে আত্মগোপন করেছিল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার জিন্সের ধোলাই কারখানায় কাজ করতে গিয়ে দুই হাত পা উলটো করে ইলেকট্রনিক শক দিয়ে নির্যাতনে শিকার কিশোর নিখোঁজ হয়ে যায়। সেই ভয়াবহ যন্ত্রণার ভিডিও সমাজ মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছিল। এই ঘটনার পর থেকেই কার্যত উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ছ’ঘরিয়ার কিশোর নিখোঁজ হয়ে যায়। নিখোঁজের খোঁজে পরিবার বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অবশেষে তাকে ফিরে পেয়ে বৃদ্ধ মা-বাবার চোখে মুখে স্বস্তির হাসি। এদিন তার বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারপর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ইসলামপুর থানা নিয়ে আসে কিশোরকে। এবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।