বন্ধে কেন স্কুল খোলা? প্রশ্ন তুলে শিক্ষকের গলা টিপে ধরলেন সহকর্মী, তুলকালাম রায়গঞ্জে
প্রতিদিন | ১০ জুলাই ২০২৫
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: স্কুল খোলা রাখাকে কেন্দ্র করে টিচার্স কমনরুমের মেঝেতে ফেলে একে অপরের গলা টিপে ধরলেন দুই শিক্ষক। হাতাহাতিতে গুরুতর জখম উভয় শিক্ষক। সহকর্মী ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে অপর শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দেন। ক্লাস চলাকালীন শিক্ষকদের আকস্মিক চিৎকারের আতঙ্কিত পড়ুয়াদের মধ্যে হুলস্থুল শুরু হয়ে যায়। ভয়ে ছাত্রছাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে স্কুল ক্যাম্পাস ছেড়ে যে যাঁর বাড়ি দিকে ছুটতে থাকে। বুধবার বাম-কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ভারত বন্ধের ভরদুপুরে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন দেবীনগর মারাইকুড়া ইন্দ্রমোহন হাই স্কুলের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।
খবর পেয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে পৌঁছয় পুলিশ। জখম শিক্ষকদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন সহকর্মীরা। মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন জখম রসায়ন শিক্ষক, সিপিএম সমর্থক সৌমেন রায়ের অভিযোগ, “বন্ধে কেন স্কুল খোলা থাকবে,তা জিজ্ঞেস করতেই স্কুলের কমন রুমে আমাকে গলা টিপে ধরে মারধর করা হয়।” অন্যদিকে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক, তৃণমূল সমর্থক কৌশিক চক্রবর্তীর অভিযোগ,”বন্ধের সঙ্গে স্কুলের কোনও সম্পর্ক নেই। একটা ক্লাস করে টিচার্স কমনরুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। তখন মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে প্রচন্ডভাবে আঘাত করা হয়।” যদিও থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি।
রায়গঞ্জ মেডিক্যালে পৌঁছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন,”এটা অনভিপ্রেত। এইরকম ঘটনা হওয়া উচিত ছিল না। তবে সম্ভবত পুরনো কোনও রাগের জন্য দুই শিক্ষকের মধ্যে মারামারি হয়েছে।” যদিও বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরাতে বিরোধী শিবির অনেক দিন ধরেই সক্রিয়ে হয়ে উঠেছে। আর তাই স্কুল অঙ্গনে একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা সূত্রে দাবি, স্কুলের একটি প্রকল্পের বিলে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর না করায় পরিকল্পিতভাবে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছিল। তার ফলেই ভারত বন্ধের দিনে স্কুল কেন খোলা থাকবে, এই ইস্যুকে সামনে রেখে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এই দিনকে খুব পরিকল্পিতভাবে বেছে নিয়ে পরস্পর বিরোধী মতাদর্শ শিক্ষকরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। যদিও জেলা স্কুল পরিদর্শক মুরারীমোহন মণ্ডল বলেন,”খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”