শখের বাইকই কাড়ল প্রাণ, পূর্বস্থলীতে বেপরোয়া গতির বলি ৩
প্রতিদিন | ১০ জুলাই ২০২৫
অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ৭ মাস আগে শখ করে বাইক কিনলেও সেই বাইকই প্রাণ কেড়ে নিল কয়েকজনের। বেপরোয়া গতির বলি হলেন এক বাইকে থাকা তিন যুবক। বুধবার পূর্বস্থলীর শিবতলা এলাকায় এমনই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সুজয় কেদারবংশী (১৯), মুকেশ কেদারবংশী (২৯), ও দিবাকর মজুমদারের(২৯)। সকলেরই বাড়ি পিলা সন্তোষপুর এলাকায়। মৃতদের পরিবার জানায়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পোলে ও দেওয়ালে পরপর দুজায়গায় ধাক্কা লাগার পর তারা প্রাণ হারায়। একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলি যেমন অথৈ জলে পড়ে, তেমনই শোকে পাথর হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
মহারাষ্ট্রে প্যাণ্ডেলে কাজ করা পূর্বস্থলীর সন্তোষপুরে বাসিন্দা সুজয় কেদারবংশী বেশ কিছুদিন যাবৎ বাড়িতেই ছিলেন। এদিন তিনি মায়ের কথামতো বাজার করার উদ্দেশ্যে বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এরপরেই ভিনরাজ্যে কর্মরত, কয়েক দিন আগে বাড়ি ফিরে আসা স্থানীয় এলাকার দিবাকর মজুমদার ও মুকেশ কেদারবংশীর সঙ্গে তার দেখা হয়। কাজ শেষে তিনজনই সুজয়ের বাইকে চেপে পাটুলি বাজার থেকে পিলা সন্তোষপুর এলাকায় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলেন। এমনসময় বৃষ্টি ও বেপোরোয়া গতির জেরে বাইকটি সজোরে ধাক্কা মারে একটি পোলে ও দেওয়ালে। একসঙ্গে তিন আরোহী জখম হন। হেলমেট না থাকায় গুরুতর চোট লাগে মাথায় ও শরীরে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানায়। খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শোকার্ত তিন পরিবারের সদস্যরা।
সুজয়ের মা রুবী কেদারবংশী জানান, “ছেলে মহারাষ্ট্রে প্যাণ্ডেলের কাজ করত। এদিন ছেলেকে বাজার করে আনতে বলি। বাইক নিয়ে যেতে নিষেধ করি। তারপর এইভাবে দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু হবে ভাবতেই পারছিনা। সাত মাস আগে ছেলে বাইকটি কেনে।” দিবাকরের স্ত্রী নমিতা মজুমদার বলেন, “স্বামী এদিন বাইরে কাজে যাবে বলে টিকিট করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পুণা, মহারাষ্ট্রে যখন যা কাজ পেত করত। দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়ে পথে বসলাম। কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।” পূর্বস্থলী থানার পুলিশ এদিন দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের জন্য দেহগুলি হাসপাতালে পাঠানো হবে।