ছেলে-বউমার জ্বালায় বাড়িছাড়া, আত্মঘাতী মা, এখনও চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ বাবা
বর্তমান | ১০ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর: নিদারুণ অভাবের কারণে বিষ খেয়েছিলেন ৭০ বছরের সন্ন্যাসী কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী ৬৫ বছরের ঝর্ণাদেবী। শনিবার বারুইপুর স্টেশনে এসেছিলেন তাঁরা। তারপর বিষ খেয়ে নেন। অসুস্থ হয়ে পড়েন দু’জনেই। জিআরপি কর্মীরা তাঁদের বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দেন। সেই রাতেই মারা যান ঝর্ণাদেবী। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর এখনও বলা জানানো হয়নি সন্ন্যাসীবাবুকে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। মাঝে মধ্যে বিড়বিড় করে নার্সদের কাছে স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছেন। প্রথমে তিনি হাসপাতালে জানিয়েছিলেন পরিবারে আর কেউ নেই। কিন্তু এখন ঘোরের মধ্যে নিজের পুত্রের কথা হঠাৎ করে বলে উঠছেন। বিষয়টি অবাক করেছে হাসপাতাল কর্মীদের।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সন্ন্যাসীবাবু প্রথমে তাঁর বাড়ি ডায়মন্ডহারবার বলেছিলেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, এ তথ্য সঠিক নয়। সন্ন্যাসীবাবুর পরিচিত এক ব্যক্তি একটি কাগজের খবরের কাটিং নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি সন্ন্যাসীবাবুর পাড়াতেই থাকেন। সন্ন্যাসীবাবুর বাড়ি গড়িয়া ছ’নম্বর ওয়ার্ডের বোয়ালিয়ায়। দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে চেনেন ওই ব্যক্তি। তিনি কথা বলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। জানান, সন্ন্যাসীবাবুর এক ছেলে আছেন। তিনি বাইপাসের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে কর্মরত। গৃহস্থ বাড়ির পাখা সারানোর কাজ করতেন সন্ন্যাসীবাবু। ছেলে ও পুত্রবধূ সন্ন্যাসীবাবু ও তাঁর ঝর্ণাদেবীকে বের করে দিয়ে বাড়ি বিক্রি করে দেন। টাকাপয়সাও কেড়ে নেন। এরপর সন্ন্যাসীবাবু স্ত্রীকে নিয়ে নবদ্বীপ চলে যান। সেখান থেকে কোনওভাবে চলে আসেন বারুইপুর। সেখানেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিসকে সব তথ্য জানাবে বলে মনস্থির করেছে। হাসপাতালে শুয়ে সন্ন্যাসীবাবু বলেন, ‘কী হবে ছেলের কথা বলে? ও আসবে না আমাকে দেখতে। আমি আর এ কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।’