নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া: নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে ফের নদ নদীগুলিতে জলস্তর বাড়ছে। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আরামবাগের বাসিন্দারা। তাঁরা ফের বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন। ইতিমধ্যে প্রশাসন প্রাথমিক প্রস্তুতি বৈঠকও সেরে রেখেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বুধবার আরামবাগ মহকুমার জনজীবন ব্যাহত হয়। এদিন সকাল থেকে দিনভর বৃষ্টি হয়। তারফলে আরামবাগ শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটে জল জমে। রাজ্য সড়কের উপর গর্ত জলে ভরে যায়। তাতে যান চলাচল সমস্যা হয়।
নদীগুলিতেও জলস্তর বাড়ছে। দ্বারকেশ্বর নদের প্রাথমিক বিপদ সীমা ১৬. ৬১ মিটার। কিন্তু, এদিন সকাল পর্যন্ত আরামবাগে জলস্তর থাকে ১২.৩১ মিটার। তবে নদের জলস্তর ক্রমেই বাড়ছে। রূপনারায়ণ নদের বন্দরে জলস্তর রয়েছে ৫.২২ মিটার। সেখানে প্রাথমিক বিপদ সীমা ৬.২৪মিটারে। এছাড়া সকাল ৮টা নাগাদ ডিভিসির তরফে ৪১ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। তা দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর দিয়ে আরামবাগ মহকুমা হয়ে নামবে। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাসিন্দারা। তবে এই মুহূর্তে মহকুমায় আতঙ্কের কোনও ব্যাপার নেই বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। কারণ জল বইছে বিপদসীমার নীচ দিয়ে। এদিন ফোনে পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভিন্ন ব্লক থেকে খোঁজ খবর নেন আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ। এদিন খানাকুল-১ ব্লক প্রশাসন বৈঠক করে। দ্বারকেশ্বরে ভেঙে যাওয়া বাঁধের কাজ দেখতে বন্দিপুর এলাকায় যান প্রশাসনের আধিকারিকরা। বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, নদীতে জল কিছুটা বেড়েছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। কোথায় কী ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে তার খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুম খোলার ব্যবস্থা রাখতে বলেছি। আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভাণ্ডারী বলেন, নদীতে জল বাড়ছে। এদিন রাতের পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এদিন বাঁকুড়ায় সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। সকালে জেলার বিভিন্ন জায়গায় দু-এক পশলা বৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার উচ্চ অববাহিকা অঞ্চলে বৃষ্টির জেরে এদিন বাঁকুড়ার নদনদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধি পায়। গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী, কংসাবতী, শালি নদীতে জলস্ফীতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। নিম্নচাপজনিত পরিস্থিতির কারণে বাজারগুলিতে সব্জি কম আমদানি হয়। শাকসব্জির দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে বৃষ্টিতে জেলার উঁচু জমিতে আমনের বীজতলা তৈরি ও রোয়ার সহায়ক হবে বলে কৃষিদপ্তর জানিয়েছে।
পুরুলিয়ায় বৃষ্টির জেরে ব্যাহত স্বাভাবিক জনজীবন। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রের খবর, ৯ জুলাই সকাল পর্যন্ত পুরুলিয়া জেলায় এবছরের মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৯৮.৮০ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের থেকে ১০৫.৮ শতাংশ বেশি। গত দু’দিনে পুরুলিয়ায় ৪৪.২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী। ফুঁসছে নদী। -নিজস্ব চিত্র