শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ফের হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাদের ভূমিকা নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি সৌমেন সেন। তিনি বিরক্ত হয়ে এসএসসি-কে প্রশ্ন করেন, ‘দাগি অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য এত সহানুভূতি কেন এসএসসি-র?’ ক্ষুব্ধ বিচারপতি এদিন সাফ জানিয়ে দেন, ‘এসএসসি কি ভুলে যাচ্ছে, আদালত স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখছে? দাগি প্রার্থীদের পক্ষে সহানুভূতি চলবে না।’
বুধবার শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতির এই মন্তব্যে আদালতে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। এদিন বিচারপতি বলেন, ‘এসএসসি যেন অযোগ্য প্রার্থীদের মুখপাত্র হয়ে উঠেছে। এই আচরণ কাম্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগে যাঁদের নাম আগেই বাতিল হয়েছে, তাঁদের পক্ষে দাঁড়িয়ে কী বার্তা দিতে চাইছে কমিশন?’
এদিন আদালতের পর্যবেক্ষণ, পূর্বেই যাঁদের সুপারিশ বাতিল হয়েছে, তাঁদের হয়েই ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে এসএসসি। ফের কমিশনের এই পুনর্বহালের আর্জিতে বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে কমিশনের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সজাগ করে দেন। তিনি বলেন, ‘কমিশনের কাজ হল যোগ্যদের সুযোগ করে দেওয়া, অযোগ্যদের পক্ষে সওয়াল করা নয়।’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য ও এসএসসি। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টও ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয়। পরিবর্তে পুনরায় স্বচ্ছ নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অযোগ্যদের নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। পূর্বেই সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, চিহ্নিত ‘দাগি অযোগ্য’রা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই নিয়োগ করতে হবে। এমনকি যে সমস্ত ‘দাগি অযোগ্য’রা ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন, তাঁদের সেই আবেদন বাতিল করতে হবে।
কিন্তু হাইকোর্টের সেই রায় মানতে নারাজ এসএসসি। সেজন্য ফের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় কমিশন। সেই মামলার সওয়ালের সময় এদিন আদালতে কমিশনের যুক্তি ছিল, কিছু প্রার্থীর ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না, তাই তাঁদের পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হোক। এসএসসি-র এই আর্জি শুনেই ফের ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট।