• মমতার বিরুদ্ধে নেই দুর্নীতির অভিযোগ, দিলীপের মন্তব্যে প্রশ্নে BJPর দিল্লির নেতার
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ জুলাই ২০২৫
  • রাজ্য বিজেপির সভাপতি হয়েই দলের আদি - নব্য দ্বন্দ মেটাতে বিশেষভাবে তৎপর হয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ তাঁর তৎপরতার প্রাথমিক সাফল্য হিসাবে মনে করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ঠিক তার পরদিনই দিলীপবাবুর মন্তব্যে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা। ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই’ বলে ফের একবার দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন তিনি। একই সঙ্গে স্পষ্ট করেছেন, তৃণমূলে যাচ্ছেন না তিনি।

    মঙ্গলবার শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের পরই দিল্লি থেকে ডেকে পাঠানো হয় দিলীপবাবুকে। বুধবার সস্ত্রীক দিল্লি পৌঁছন দিলীপবাবু। দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে দলের যুগ্ম সম্পাদক শিব প্রকাশের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো সবার প্রশংসা করি। কারও বিরুদ্ধে বিনা কারণে কিছু বলতে দেখেছেন আমাকে? কারও সঙ্গে আমার শত্রুতা নেই। প্রশংসা করব না কেন? আমি শুধু বলেছি যে, যারা এত বড় বড় কথা বলছে তাদের নামে কেস আছে। আর যাকে নিয়ে এত চর্চা তার নামে কেস নেই কেন? যার নামে কেস নেই, চোর ডাকাত বলে কেউ প্রমাণ করেনি তার সঙ্গে গিয়ে আমি বসি, আমি খারাপ হয়ে গেলাম?’

    দিলীপবাবুর এই মন্তব্যে নতুন করে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। কারণ রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিসহ একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ করেছে বিজেপি। ২০২৬এর নির্বাচনে রাজ্যে হিন্দুত্ব বাদ দিলে তাদের কাছে সব থেকে বড় ইস্যু হল দুর্নীতি। নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও আবাস, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। অথচ যাঁর সরকারের বিরুদ্ধে এত দুর্নীতির অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে একটিও দুর্নীতির মামলা নেই?

    অনেকে আবার দিলীপবাবুর এই বক্তব্যে বামপন্থীদের বক্তব্যের প্রতিফলন শুনতে পাচ্ছেন। বিভিন্ন ইস্যুতে বার বার দিদি - মোদী সেটিংয়ের অভিযোগে সরব হয়েছে সিপিএমসহ বাম দলগুলি। তাদের দাবি, তৃণমূলের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চললেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে হাত দেয় না সিবিআই। আর কখনও চাপ বাড়লে দিল্লি সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরই সেই তদন্ত ধামাচাপা পড়ে যায়। নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে ‘জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’এর পরিচয় জানায়নি সিবিআই। অথচ বিজেপি রাস্তায় স্লোগান দিয়ে বেড়াচ্ছে ‘পিসি চোর – ভাইপো চোর’।

    দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে রাজ্য বিজেপির অস্বস্তি বাড়বে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই, তবে তার থেকেও বেশি অস্বস্তিতে পড়বে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একদিকে সিবিআইকে আদালতের লাগাতার ভর্ৎসনা, অন্যদিকে দিলীপবাবুর মন্তব্য, সব মিলিয়ে ২০২৬এ বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্ন বানচাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ষোল আনা।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)