আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার এক বছর হতে চলেছে। এই ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় শিয়ালদহ আদালত। এবার সাজাপ্রাপ্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায় বেকসুর খালাসের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। যদিও মামলাটি গ্রহণ করা হবে কিনা সেই নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি দায়ের হয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডে শুরুতেই সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর অনেক জল গড়িয়েছে। সকলের দাবি ছিল এই কান্ডে আরও অনেকে জড়িত রয়েছেন। কিন্তু প্রথমে কলকাতা পুলিশ এবং পরে সিবিআই এই ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করলেও আর কাউকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেনি। শিয়ালদহ আদালত তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এই সাজা নিয়ে কেউই সন্তুষ্ট ছিলেন না। সিবিআই থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও তাঁর ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছিল। কিন্তু আদালত সেই দাবির পক্ষে সায় দেয়নি। এমনকি নির্যাতিতার মা-বাবাও সায় দেয়নি। তাঁদের বক্তব্য, সঞ্জয় একমাত্র দোষী নন। এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন আরও অনেকে। তাঁদের একমাত্র ধরিয়ে দিতে সাহায্য করতে পারে সঞ্জয়। এবার সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় নিজেই বেকসুর খালাসের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে এই মামলা গ্রহণ নিয়ে সব পক্ষকেই নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের উচ্চ আদালত। কোনও সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। আগামী ১৬ জুলাই এই মামলার শুনানি হতে পারে।
সঞ্জয় রায়ের সাজা পাওয়ার পরও আসল অপরাধী মুক্ত এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের একাধিক পক্ষ। ফের এর প্রতিবাদে পথে নামতে চলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। গতবছর ৮ আগস্ট রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদে এ বছর ৮ আগস্ট রাত ১২টায় শ্যামবাজারে জমায়েতের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শ্যামবাজার থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মশাল মিছিল করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। এই কর্মসূচিতে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে আর জি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার এই কর্মসূচির ঘোষণা করেন।
তিনি জানিয়েছেন, শুধুই ৮ আগস্ট নয়, ৯ আগস্টও একাধিক কর্মসূচি পালন করবে জুনিয়র ডাক্তাররা। ৯ আগস্ট সকালে আর জি করে ‘ক্রাইস অফ আওয়ারে’র সামনে জমায়েত হবে। পালিত হবে রাখিবন্ধন উৎসব। এই জমায়েতে বিভিন্ন কলেজে চলা থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হবে। সাংবাদিক বৈঠকে দেবাশিষ বলেন,’আমরা আবার চিৎকার করব। এখন রাজ্যে গুলিয়ে দেওয়ার রাজনীতি চলছে। তবে আমরা কেউ সে দিনের রাতের কথা ভুলিনি। ভুলব না।’