যুবককে পিটিয়ে হত্যা, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার সিভিক সহ ৬
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১০ জুলাই ২০২৫
মোবাইল চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার সহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম তাপস মহাপাত্র। পরিবারের অভিযোগ ছিল, গোটা ঘটনাই ঘটেছে টামনা থানায় কর্মরত সিভিক মলয়ের উপস্থিতিতে।
গত সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ বলরামপুর থানার উরমা এলাকা থেকে তিন ব্যক্তি, টামনা থানার সিভিক ভলান্টিয়ার মলয়কুমার পুইতণ্ডী এবং চাকলতোড় গ্রামের বাপন মহাপাত্র ও আকাশ কৈবর্ত তাপসের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর শুরু করেন। পরে তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বার করে একটি মোটরবাইকে চাপিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণ পরে ফোন করে তাপসের পরিবারকে জানানো হয়, তাপস বিষ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাপসের মৃত্যু হয়।
মৃত যুবকের মা ভাদু মহাপাত্র টামনা থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে লিখেছেন, ‘আমার ছেলে বাড়িতেই ছিল। হঠাৎ করে ছ’জন মিলে তাঁকে মারধর করে টেনে নিয়ে যায়। আমরা কিছুই বুঝে ওঠার আগেই ছেলেকে মোটরবাইকে তুলে নিয়ে চলে যায়। পরে জানতে পারি, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু তখন আর বাঁচানো গেল না।’ এই ঘটনার তদন্তে নেমে টামনা থানার পুলিশ এবং পুরুলিয়া জেলা পুলিশ বুধবার রাতেই অভিযুক্তদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন এবং ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর টামনা থানা এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশের ভূমিকা ও সিভিক ভলান্টিয়ারের আচরণ ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার নেপথ্যে ঠিক কী কারণে এমন নির্মম পিটুনি, আদৌ মোবাইল চুরির অভিযোগ কতটা সত্য – তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা করতে চান তদন্তকারীরা। এর আগে চিপ্স চুরির ‘অপরাধে’ পূর্ব মেদিনীপুরে এক শিশুকে রাস্তায় কান ধরিয়ে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছিল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছিল সেই শিশু।