রাজন্যার স্বামীর মদতে দলের লিগাল সেলের পদে কসবার মনোজিৎ! প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য
প্রতিদিন | ১০ জুলাই ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: সাসপেন্ডেড বিতর্কিত তৃণমূল ছাত্রনেত্রী রাজন্যা হালদার এবং কসবা আইন কলেজের গণধর্ষণের ঘটনায় ধৃত মনোজিৎ মিশ্রকে ঘিরে নয়া বিতর্ক শোরগোল ফেলে দিল রাজ্য রাজনীতিতে। অভিযোগ উঠেছে, দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মনোজিৎকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের লিগাল সেলের কো-অর্ডিনেটর করেছিলেন রাজন্যার স্বামী প্রান্তিক চক্রবর্তী। আর এর পরেই তৃণমূলের অন্দরমহলের সরাসরি প্রশ্ন, যেখানে তাঁর স্বামীই মনোজিৎকে বড় পদ পাইয়ে দিয়েছিলেন, সেখানে কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্তর মোবাইলে নিজের নগ্ন ছবির কাহিনির মতো অভিযোগ তোলার সাহস পায় কী করে রাজন্যা? এখানেই শেষ নয়, ২০২৪ সালের ঘটনার কথা তখন না বলে এখন কেন তুলছেন রাজন্যা, তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী শতাব্দী রায় ও বিধায়ক অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিনকয়েক আগে এই রাজন্যাই কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে টার্গেট করে অভিযোগ করেছিলেন, ‘এআই দিয়ে তৈরি আমার নগ্ন ছবি মনোজিতের মোবাইলে রয়েছে বলে খবর পেয়েছিলাম।’ কিন্তু বুধবার ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র আইনজীবী তিতাস মান্নার এক বিস্ফোরক অভিযোগ মনোজিৎকে কেন্দ্র করে খোদ রাজন্যাকেই চরম বিপাকে ফেলে দিল। তিতাসের অভিযোগ, “২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যে লিগাল সেল তৈরি হয়েছিল তার দায়িত্বে ছিলেন রাজন্যার স্বামী প্রান্তিক চক্রবর্তী। আর প্রান্তিকই ওই সেলের কো-অর্ডিনেটর হিসাবে মনোজিৎ মিশ্রের নাম সুপারিশ করেছিলেন।” শুধু তাই নয়, ছাত্রী নির্যাতন থেকে শুরু করে পুলিশে অসংখ্য অভিযোগ থাকা মনোজিৎকে কেন লিগাল সেলে নেওয়া হচ্ছে সেই প্রশ্ন তোলায় তিতাস মান্নাকে প্রান্তিক শোকজ করেন বলেও অভিযোগ। ছবি ও শোকজের চিঠি এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখিয়ে এদিন তিতাসের দাবি, “কী কারণে শোকজ করা হল, অপরাধ কী জানতে চাইলে তার উত্তর দেননি রাজন্যার স্বামী।”
যদিও প্রান্তিক সরাসরি মনোজিৎকে পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগের দায় এড়িয়ে বলেছেন, “শুধু আমি একা ওই লিগাল সেল তৈরির দায়িত্বে ছিলাম না, আরও অনেকে মিলে কমিটি গড়া হয়েছিল।” যদিও আইনজীবী তিতাস এদিন পাল্টা তথ্য ও ছবি তুলে দাবি করেছেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদে আগে কোনও লিগাল সেল ছিল না। রাজন্যার স্বামী প্রান্তিকই এই সেল তৈরি করান। আর সেখানে দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মনোজিৎ মিশ্রদের মতো দাগি অপরাধীদের কমিটিতে ঢুকিয়েছিলেন।” প্রান্তিকের সঙ্গে মনোজিতের একাধিক ছবিও প্রকাশ করেছেন আইনজীবী। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, যে মনোজিৎকে স্বামী নিজেই প্রোমোট করেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলীয় পদ পাইয়ে দিয়েছেন, সেখানে স্ত্রী রাজন্যার সঙ্গে কসবা কাণ্ডের অভিযুক্তের সম্পর্ক কতটা ‘মধুর’ ছিল? আর এর পরই প্রশ্ন, রাজন্যার দাবিমতো কেন শুধু মনোজিতের মোবাইল ফোনেই তাঁর ‘নগ্ন এআই ছবি’থাকবে? অবশ্য প্রান্তিকের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ নিয়ে রাত পর্যন্ত রাজন্যার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।