কসবাকাণ্ড: ‘পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট’, ফের জানাল নির্যাতিতার পরিবার
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ জুলাই ২০২৫
দক্ষিণ কলকাতার কসবার আইন কলেজের পড়ুয়াকে গণধর্ষণের ঘটনার তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশের সিট। বৃহস্পতিবার এই মামলার তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ল কলকাতা হাইকোর্টে। এদিন নির্যাতিতার পরিবার আদালতে ফের জানায়, পুলিশ বা সিটের তদন্তে তাঁরা সন্তুষ্ট।
বৃহস্পতিবার মুখবন্ধ খামে কসবাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দেয় সিট, কসবা থানার তদন্তকারী অফিসার। হলফনামা দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। গোপন জবানবন্দি এবং মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখেন বিচারপতি সৌমেন সেন। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অরিন্দম জানা দাবি করেন, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ নেই। পুলিশি তদন্তে সন্তুষ্ট নির্যাতিতার পরিবার। তদন্ত রিপোর্টের কপি হাতে চান তিনি। আইনজীবী বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্টের কপি হাতে পেলে আমরাও জানতে পারব যে তদন্ত কোন পর্যায়ে আছে।’
কসবার আইন কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত তদন্ত রিপোর্ট নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীকেই শুধু দেওয়া হবে। অন্য কাউকে এই রিপোর্ট হস্তান্তর করা যাবে না। আদালত জানিয়েছে, চার সপ্তাহ পর আবার তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আগামী ২১ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, কসবার কলেজে ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল কলকাতা পুলিশ। অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষালের নেতৃত্বে কসবাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে সিট। প্রথমে সিটের সদস্যা সংখ্যা ছিল ৫। পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ৯। তদন্তে নেমে সিট নির্যাতিতা ছাত্রী ও তিন অভিযুক্তর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে। সেগুলি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মামলাকারীর এক আইনজীবী অভিযোগ করেন, অভিযুক্তদের যেভাবে আদালতে তোলা হচ্ছে, তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এরপর ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, ‘এই বিষয়ে আপনার যদি কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে রাজ্য লিগাল এড সার্ভিসে গিয়ে জানান।’ এদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ হলফনামায় জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ ও ৯ সেপ্টেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষ নোটিশ ইস্যু করেছিল। তাতে বলা হয়, ৪টের মধ্যে কলেজ খালি করে দিতে হবে।
২৫ জুন কসবার ওই আইন কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২৭ জুন। নির্যাতিতার অভিযোগ, ২৫ জুন, বুধবার রাতে প্রথমে কলেজের ইউনিয়ন রুমে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁকে রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কলেজের নিরাপত্তা রক্ষী সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে এক জন, যাঁকে ‘এম’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, তিনি কলেজের প্রাক্তনী। বাকি দু’জন (‘জে’ এবং ‘পি’ হিসাবে চিহ্নিত) এখনও কলেজে পড়াশোনা করছিলেন।