সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: তৃণমূলের একুশে জুলাই শহিদ দিবসের ধর্মতলার সভাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এনআরসির নোটিস পাওয়া দিনহাটার বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসী। তৃণমূল নেতা কর্মীদের সাথে কলকাতার শহিদ দিবসের সভায় যাওয়ার কথা রয়েছে তার। যদিও একুশে জুলাইয়ের সভা মঞ্চে উত্তমকুমারকে ডাকা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোন নেতাই মুখ খোলেননি। দিনহাটার তৃণমূলের দাপুটে বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, আমার কাছে এমন কোন খবর এখনও পর্যন্ত নেই। যদিও উত্তমকুমার ব্রজবাসী বলেন, এলাকার তৃণমূলের নেতারা আমাকে একুশে জুলাই কলকাতার শহিদ দিবসের সভায় যাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। আমি সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে কলকাতার সভায় যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার উত্তমকুমারকে নিয়ে ‘মহড়া’ সেরেছে তৃণমূল। দিনহাটার সীমান্ত এলাকা নটকোবাড়িতে তৃণমূলের এক পথসভার মঞ্চে এদিন সন্ধ্যায় দেখা গিয়েছে তাঁকে।
বাংলার বাসিন্দা হলেও কয়েকদিন আগেই উত্তমকুমারকে বিজেপি শাসিত অসম সরকারের এনআরসির চিঠি পাঠানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বিষয়টি জানার পরই বেজায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে তোপ দাগেন। বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও, বাংলার বাসিন্দাকে অনুপ্রবেশের নোটিস ধরানোকে বিজেপির বাংলা বিরোধী চক্রান্ত বলেও দাবি করে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার রাজবংশী সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে অনুপ্রবেশকারীর নোটিস ধরানোর ইস্যু নিয়ে যথেষ্টই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে বিজেপি। আর এই ইস্যুকে নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় জোরদার আন্দোলন শুরু করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের একুশে জুলাই শহিদ দিবসের কলকাতার ধর্মতলার সভার দিকে বরাবরই নজর থাকে রাজ্যেবাসীর পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেরও। আগামী বছর রাজ্যের বিধানসভা ভোট। তার আগে তৃণমূলের একুশের মঞ্চ থেকেই যে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাব্বিশের সুর বেঁধে দেবেন সেটাও কার্যত স্পস্ট। সেই সাথে শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলা বিরোধী বিজেপির বিরুদ্ধেও সুর চরাবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বাংলার বাসিন্দাকে এনআরসির নোটিশ পাঠানোর বিষয়টিকেও হাতিয়ার করে সভায় সরব হবেন বক্তারা। আর সেই সভায় উত্তমকুমার ব্রজবাসীর উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা ক্রমেই উজ্জ্বল হচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।