সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বৃহস্পতিবার গুরুপূর্ণিমায় নবদ্বীপের বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে সকাল থেকেই ভিড় দেখা গেল। এদিন শিষ্য ও ভক্তরা ফুল, ফল, মিষ্টি নিয়ে গুরুবন্দনা করে আশীর্বাদ চেয়ে নিলেন। কেউ কলকাতার যাদবপুর, আমতা, কেউ বা পূর্ব বর্ধমানের কালনা, হুগলির গুপ্তিপাড়া, আরামবাগ, দুর্গাপুর, আসানসোল, মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে এসেছেন। সেইসঙ্গে অসম, ত্রিপুরা, ওড়িশা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ নানা রাজ্য, এমনকী বিদেশ থেকেও ভক্তরা নিজ নিজ গুরুবাড়িতে এসেছিলেন। সেজন্য নবদ্বীপের ফেরিঘাট থেকে রেলস্টেশন-সর্বত্রই ভিড় ছিল।
বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপে ছোট-বড় ১৫০-এর বেশি মঠ-মন্দির রয়েছে। গুরুপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সবমিলিয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে। প্রতিবছরের মতো বলদেব জিউ মন্দির, জন্মস্থান মন্দির, মদনমোহন মন্দির, প্রাচীন মায়াপুর শ্রীশ্রী রাধা মদনগোপাল মন্দির, সমাজবাড়ি, রামকৃষ্ণ মঠ প্রভৃতি মন্দিরে সকাল থেকে ভক্তরা ভিড় করেন। কলকাতার গড়িয়া থেকে এসেছিলেন তপতী সরকার ও অরুণ সরকার। তাঁরা জানান, এই বিশেষ দিনে সপরিবারে গুরুপুজো করতে এসেছি। প্রতিবছরই এই দিনে গুরুবাড়িতে আসি।
শ্রীশ্রী রাধা মদনগোপাল মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত প্রভুপাদ কৃষ্ণগোপাল গোস্বামী বলেন, গুরুপূর্ণিমায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিষ্যরা এসেছেন। গুরুপূর্ণিমায় গুরুর কাছে দীক্ষা নেওয়া একটা বড় কর্ম। স্বয়ং মহাপ্রভু সেই শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। দীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্য মানুষকে সৎপথে চালিত ও সৎকর্মে নিয়োজিত করা, সর্বোপরি গোবিন্দের চরণ চেনানো। নিতাই-গৌরের চরণ কীভাবে চিনব-তা গুরুর কাছ থেকেই জানতে হবে। এজন্যই দীক্ষা নেওয়া হয়। মদনমোহন মন্দিরের সেবায়েত প্রভুপাদ নিত্যগোপাল গোস্বামী বলেন, ধর্মপরায়ণ মানুষের কাছে বছরে এই তিথিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মন্দিরে হাজারের বেশি ভক্ত এসেছেন। গুরুপূজা মহোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। তবে বর্ষার কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার ভক্তদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। এদিন নবদ্বীপ রামকৃষ্ণ মিশনেও গুরুপূর্ণিমা পালিত হয়। ভোর থেকে বহু মানুষ আশ্রমে আসেন। সকাল থেকে মঙ্গলারতি, বৈদিক মন্ত্রপাঠ, বিশেষ পূজা, পুষ্পাঞ্জলি, ভজন, হোম হয়। দীপক পাল ভজন পরিবেশন করেন। দুপুরে ভোগ-আরতির পর প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এদিন বিকেলে শ্রীশ্রীশ্যাম নামসংকীর্তনের পর বেলুড় মঠ থেকে আসা স্বামী নিষ্ঠানন্দ ধর্মালোচনা করেন। • নিজস্ব চিত্র