মন্দারমণিতে মেরিনড্রাইভের দু’কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ না হওয়ায় সমস্যায় পর্যটকরা
বর্তমান | ১১ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, কাঁথি: দীঘা-শৌলা মেরিনড্রাইভের রাস্তায় দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর থেকে মন্দারমণি সংলগ্ন দাদনপাত্রবাড় পর্যন্ত দু’কিলোমিটার অংশ সম্প্রসারণ না হওয়ায় পর্যটকরা সমস্যায় পড়েছেন। এই রাস্তাটি তৈরির দায়িত্বে রয়েছে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা(ডিএসডিএ)। ওই অংশে দু’লেনের রাস্তা আগে থেকেই রয়েছে। তা বাড়িয়ে ফোর লেনের করার কথা থাকলেও হয়নি। বর্তমানে সংকীর্ণ টু’লেনের রাস্তায় প্রতিনিয়ত প্রচুর গাড়ি চলাচলের কারণে যানজট হচ্ছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে। ক্রমাগত চাপ বাড়ায় রাস্তা দ্রুত ভেঙেও যাচ্ছে। তাছাড়া রাস্তার এই অংশে কোনও আলো নেই। সন্ধ্যা হলেই এলাকাটি অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। অসমাপ্ত সেই রাস্তা তৈরি এবং পথবাতির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন পর্যটকরা সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। দীঘা থেকে শৌলা সমুদ্রতীর বরাবর মেরিনড্রাইভ রাস্তা প্রায় ৩০কিলোমিটার। পর্যটকরা গাড়ি নিয়ে সমুদ্রতীর ধরে শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণি পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে শৌলায় আসেন। এখান থেকে বগুড়ানজালপাই, জুনপুট, বাঁকিপুটের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে যান। আবার একইভাবে শৌলা থেকে দীঘায় পৌঁছে যান পর্যটকরা। মেরিনড্রাইভ রাস্তাকে একসূত্রে বেঁধেছে দীঘা-শঙ্করপুর, মন্দারমণি-তাজপুর ও শৌলা-দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর সংযোগকারী তিনটি বড় ব্রিজ। স্থানীয় কালিন্দী সহ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন নানা কাজে মেরিনড্রাইভ রাস্তায় যাতায়াত করেন। মহকুমা শহর কাঁথির সঙ্গে যোগাযোগ সুবিধা হওয়ায় মেরিনড্রাইভ রাস্তাটি বহু মানুষ ব্যবহার করেন। পাশাপাশি মন্দারমণি যেতে সুবিধা হওয়ায় এই রাস্তাটি পর্যটকরা ব্যবহার করেন। দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর থেকে দাদনপাত্রবাড় যাওয়ার রাস্তার দু’দিকে অনেকগুলি হোটেল-লজ ও রিসর্ট রয়েছে। সব মিলিয়ে মেরিনড্রাইভের রাস্তার এই অংশটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জানা গিয়েছে, এর আগে শৌলা ব্রিজের গোড়া থেকে দাদনপাত্রবাড় পর্যন্ত ফোর লেনের রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করে ডিএসডিএ। কাজও শুরু হয়। দু’কিলোমিটারের বেশি ঝকঝকে ফোর লেনের রাস্তা বছরখানেক আগে হয়ে গিয়েছে। তারপর দাদনপাত্রবাড় পর্যন্ত বাকি দু’কিলোমিটার অংশ ফোর লেনের হয়নি। অথচ ফোরলেনের কাজের জন্য রাস্তায় মাটি ভরাট, বিদ্যুতের খুঁটি সরানো হয়েছিল। যে ঠিকাদার সংস্থা কাজ করছিল কোনও কারণে তারা মাঝপথে চলে যায়। তারপর উন্নয়ন সংস্থার তরফে তাদের ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ করা হয়েছে। এদিকে কাজ আর শুরুই হয়নি। জগন্নাথ মন্দিরের দরজা খুলে যাওয়ার পর এই রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। রাস্তাটি সংকীর্ণ হওয়ায় দু’টি গাড়ি একসঙ্গে পাশ কাটাতে অসুবিধা হয়। তাই রাস্তাটি সম্প্রসারণ করে ফোর লেনের কাজ শুরু করার দাবি তুলেছেন যাতায়াতকারী সকলে। এদিকে রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকরা সমস্যায় পড়েন। রাতেরবেলা নিজেদের গাড়ির আলো আর রাস্তার পাশে দোকানপাটের আলোর উপর ভরসা করতে হয়। একইভাবে যাতায়াত করতে সমস্যায় পড়েন স্থানীয় গ্রামগুলির বাসিন্দারা। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। দাদনপাত্রবাড়ের বাসিন্দা অমিতশঙ্কর দাস বলেন, অনেকদিন ধরেই একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাস্তাটি। কাজ শুরুর উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। ফোর লেনের রাস্তার অসমাপ্ত কাজ অবিলম্বে শুরু করা দরকার। ডিএসডিএর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক নীলাঞ্জন মণ্ডল বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। এব্যাপারে বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। বর্ষার পর রাস্তার কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।