• ভারী বৃষ্টির জের, তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে ময়ূরাক্ষীতে ছাড়া হচ্ছে জল
    বর্তমান | ১১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি ও সংবাদদাতা, রামপুরহাট: টানা বৃষ্টিতে বীরভূম জেলার একাধিক নদী ফুলেফেঁপে উঠছে। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় তিলপাড়া সহ একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার সিউড়ি ও রামপুরহাট মহকুমার ছ’টি কজওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। সাঁইথিয়ায় ফেরিঘাটের উপর দিয়ে অবিরাম নদীর জল বইছে। এই পরিস্থিতিতে বিপদ এড়াতে প্রশাসনের তরফে প্রতিটি কজওয়ে ও ফেরিঘাট হয়ে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। জেলার ময়ূরাক্ষী, অজয় সহ একাধিক নদীর জলস্তরের উপর নজর রাখা হচ্ছে।

    জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, কজওয়ে হয়ে যাতায়াতে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নজরদারি চালানো, প্রয়োজনে গার্ডরেল বসানোর কথা বলা হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেও পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সর্বত্র প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

    গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে একাধিক নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। কুয়ে নদীর জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি বইছে। বাকি সমস্ত নদীর জলস্তর অবশ্য এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টির জেরে একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে।

    সেচদপ্তর জানিয়েছে, সিউড়ি মহকুমার অধীন ময়ূরাক্ষী নদীর তিলপাড়া জলাধার থেকে প্রায় ১৬০০কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। তার জেরে সাঁইথিয়া পুর এলাকায় ময়ূরাক্ষী নদীর ফেরিঘাট জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফেরিঘাটটি ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে। মল্লারপুর থেকে সাঁইথিয়া যাওয়ার জন্য বহু মানুষ এই ফেরিঘাটের উপর নির্ভর করেন। ফেরিঘাট জলের তলায় চলে যাওয়ায় তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন।

    হিংলো ড্যাম থেকেও জল ছাড়া হয়েছে। যার জেরে হিংলো ও শাল নদীর জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফলে দুবরাজপুর ব্লকের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর ও কুখুটিয়া গ্রামের মাঝে শাল নদীর উপর তৈরি কজওয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া, খয়রাশোলের পানসিউড়ি-কেন্দ্রগড়িয়ার মাঝ বরাবর থাকা কজওয়ের উপর দিয়ে হিংলো নদীর জল বয়ে চলেছে। রামপুরহাট মহকুমার বৈধরা ব্যারাজ থেকে ছাড়া জলে ব্রাহ্মণী নদীতে জলস্ফীতি লক্ষ্য করা যায়। তার জেরে নলহাটি-১ ব্লকের সোনারকুণ্ডু, ভগবতীপুর, ঝাউপাড়া ও দেবগ্রাম ঘাটের কজওয়ে এখন জলের তলায়। বিভিন্ন জায়গায় বাসিন্দাদের ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে দেবগ্রামে নৌকায় পারাপার শুরু হয়েছে। বৃষ্টির জেরে দ্বারকা নদের জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তারাপীঠে আসা পুণ্যার্থীদের দ্বারকা নদে নামায় পুলিস নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

    শাল নদীর জলে এবার পাকা রাস্তাও ডুবতে শুরু করেছে। বেলসাড়া গ্রাম থেকে কুলেকুরি গ্রামে যাওয়ার পিচ রাস্তার একাংশ জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন। দুবরাজপুর ব্লকের চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা মিলন ভাড়ারী বলেন, দুপুর থেকে শাল নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। কজওয়ে ডুবে গিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন। আমরা সবাই আতঙ্কে রয়েছি। সাঁইথিয়ার বাসিন্দা আকাবুল শেখ বলেন, ফেরিঘাট ডুবে যাওয়ায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)