ছয়ের দশকের ডাবল ব্যারেল চ্যানেল সাফাই এবার জল-যন্ত্রণা থেকে মিলবে মুক্তি
বর্তমান | ১১ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়া শহরের বিস্তীর্ণ অংশকে জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে ১৯৬০-’৭০ সাল নাগাদ তৈরি করা হয়েছিল ডাবল ব্যারেল চ্যানেল। ছয়ের দশকে তৈরি হওয়া এই চ্যানেলের মাধ্যমেই হাওড়া শহরের কমবেশি ১৪টি ওয়ার্ডের জমা জল সরাসরি গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। রাশি রাশি নোংরা, আবর্জনা জমে থাকার কারণে গত বছর বর্ষায় জলপ্রবাহে চরম সমস্যা দেখা দিয়েছিল ডাবল ব্যারেল চ্যানেলে। তাই এই বছর দ্রুততার সঙ্গে এই চ্যানেল পরিষ্কারে হাত লাগিয়েছে হাওড়া পুরসভা। এবারের বর্ষায় জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে ডাবল ব্যারেল চ্যানেল, এমনটাই দাবি পুরসভার।
ইস্ট ওয়েস্ট বাইপাস সংলগ্ন টিকিয়াপাড়া থেকে সিঙ্গেল ব্যারেল চ্যানেল শুরু হয়েছে। দাশনগরের শানপুর মোড়ের কাছে সেটি ডাবল ব্যারেল চ্যানেলে মিশেছে। এরপর শৈলেন মান্না সরণি হয়ে কোনা এক্সপ্রেসের নীচে দিয়ে পদ্মপুকুরের পিছনে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল ব্যারেল চ্যানেল যুক্ত হয়েছে ৬ নম্বর ব্রাঞ্চ চ্যানেলের সঙ্গে। সেখান থেকে নাজিরগঞ্জ হয়ে গঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত গভীর নিকাশিনালা। হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৯-এর মতো বড় বড় ওয়ার্ডের জমা জল ডাবল ব্যারেল চ্যানেলে এসে পড়ে। অর্থাৎ উত্তর ও দক্ষিণ হাওড়ার কয়েকটি ওয়ার্ড বাদে বেশিরভাগেরই নিকাশি ব্যবস্থা এই চ্যানেলের উপর নির্ভরশীল। গত বছর আগস্ট মাস থেকে গোটা বর্ষাকাল জমা জলের সমস্যায় ভুগেছে এই ওয়ার্ডগুলি। বিশেষত টিকিয়াপাড়া, বেলগাছিয়া, পঞ্চাননতলা, শৈলেন মান্না সরণি সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অংশ কার্যত বানভাসি হয়ে পড়ে। কারণ অনুসন্ধানে নেমে পুরসভার তরফে সেপ্টেম্বর মাসে ডাবল ব্যারেল চ্যানেল পরিষ্কার করা হয়। তাতেই মাথায় হাত পড়ে সাফাই কর্মীদের। ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে ইকোপার্কের কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণ বালিশ ও কম্বল। সেগুলি চ্যানেলের ভিতরে আটকে থাকার কারণে জলের প্রবাহ অনেকটাই কমে গিয়েছিল। পাশাপাশি প্রচুর আবর্জনাও বের হয় সেখান থেকে।
এ বছরে তাই আগে থেকেই ডাবল ব্যারেল চ্যানেল পরিষ্কার করতে উদ্যোগী হয়েছে হাওড়া পুরসভা। টিকিয়াপাড়া, শানপুর মোড় ও বেলেপোল— এই তিন জায়গায় ভারী এক্সকেভেটর, বাকেট মেশিন নামিয়ে দ্রুততার সঙ্গে সাফাই করা হচ্ছে ওই চ্যানেল। প্রচুর সংখ্যক সাফাই কর্মীকে সেই কাজে নামানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ। পুরসভার দাবি, ডাবল ব্যারেল চ্যানেল সম্পূর্ণ পরিষ্কার থাকায় এবারের বর্ষায় ওয়ার্ডগুলিতে জল জমলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা নেমে যাবে। পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘ছোট ও মাঝারি নালার পাশাপাশি শহরের হাইড্র্যান্টগুলি পরিষ্কারের উপর এবার বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ডাবল ব্যারেল চ্যানেলে এখন ব্লকেজ না থাকায় চলতি বর্ষায় আর দীর্ঘ সময় জলযন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না বাসিন্দাদের’। নিজস্ব চিত্র