• চাপ বাড়ছে কোষাগারে, সরকারি দপ্তরের খরচে রাশ নবান্নের
    এই সময় | ১১ জুলাই ২০২৫
  • এই সময়: বিভিন্ন দপ্তরের টাকা খরচে রাশ টানল নবান্ন। কোপ পড়েছে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা অনুমোদনের ঊর্ধ্বসীমায়। এখন থেকে আর স্বাধীন ভাবে বড় অঙ্কের প্রকল্পের অনুমোদন দিতে পারবে না কোনও দপ্তরই।

    সম্প্রতি টাকা খরচের ক্ষেত্রে বেশ কিছু দপ্তরের কাজে অসঙ্গতি চোখে পড়েছে সরকারের। আবার ভাঁড়ারের স্বাস্থ্যও তেমন ভালো নয়। এ কারণেই রাশ টানার সিদ্ধান্ত। এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে অর্থ দপ্তর। প্রশাসনের ব্যাখ্যা, যে কোনও প্রকল্পে খরচ আরও যুক্তিসঙ্গত করতেই এই সিদ্ধান্ত।

    টানাটানির সংসারে কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার অবস্থা নেই, সে কথা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও অর্থাভাবে বকেয়া ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি রাজ্যের।

    অবস্থা যখন এমন, তখন অর্থ দপ্তরের বক্তব্য, বেশ কিছু দপ্তর সরকারের কোষাগারের কথা না-ভেবেই খরচ করছে। প্রকল্পের বাছবিচার পর্যন্ত করা হচ্ছে না। ঠিক ভাবে হচ্ছে না খরচের রিভিউও।

    এর উপরে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার মতো একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে গত তিন-চার বছর ধরে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ। রাজ্য নিজেদের কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে সেই প্রকল্পগুলি চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো একগুচ্ছ সামাজিক প্রকল্প। ফলে টাকার জোগানের ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছে।

    কোনও প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সর্বোচ্চ কত টাকা অনুমোদন দিতে পারবে, তার জন্য ২০২৩–এ একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য। সেই নির্দেশিকাই সংশোধন করা হয়েছে। দপ্তরের সচিব এবং প্রধান সচিবেরা কোনও প্রকল্পে সর্বোচ্চ কত টাকার অনুমোদন দিতে পারবেন, তা নির্ধারিত করা হয়েছে।

    নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পূর্ত, সেচ, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, পুর ও নগরোন্নয়নের মতো দপ্তরগুলি এখন থেকে সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকার প্রকল্পে অনুমোদন দিতে পারবে। নতুন প্রকল্প হোক বা চলতি প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ — সব ক্ষেত্রেই ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা। ২০২৩–এর নির্দেশিকায় এই অঙ্ক ছিল ৫ কোটি টাকা।

    উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন, সুন্দরবন উন্নয়ন এবং পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের কাজের ক্ষেত্রে এই ঊর্ধ্বসীমা ১ কোটি টাকা। আগের নির্দেশিকায় যা ছিল ৩ কোটি টাকা। আবাসন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই), তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করা হয়েছে ৭৫ লক্ষ টাকা।

    বাদবাকি অন্যান্য দপ্তরের ক্ষেত্রে ৫০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারিত করেছে নবান্ন। অর্থসচিব প্রভাতকুমার মিশ্রের স্বাক্ষরিত নির্দেশিকায় এ-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, সব ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উপদেষ্টার অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

  • Link to this news (এই সময়)