জাতীয় সড়কে যান নিয়ন্ত্রণের সময় বিপত্তি। লরির ধাক্কায় প্রাণটাই চলে গেল খোদ ট্র্যাফিক পুলিশের ওসির। বৃহস্পতিবার রাতে মর্মান্তিক এই পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার শেখদিঘী বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়। মৃত পুলিশ কর্মীর নাম রাজকুমার কর্মকার (৪৮)। তিনি জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার অন্তর্গত সাগরদিঘী ট্রাফিক গার্ডের অফিসার ইনচার্জ ছিলেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাগরদিঘি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। খবর চাউর হতে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয় এলাকাতেও। মুহূর্তেই প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়। দুর্ঘটনার পরেই ওই পুলিশ কর্মীকে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখছে সাগরদিঘি থানার পুলিশ। পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করলেও চালক পলাতক।
সূত্রের খবর, বুধবার সকালে সাগরদিঘির মোড়গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় একটি ছোট দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর একটি লরি রাস্তায় খারাপ হয়ে পড়ায় ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ৯টা নাগাদ রাজকুমার কর্মকার আরও কয়েকজন পুলিশ আধিকারিককে নিয়ে একটি রিকভারি ভ্যান সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ওই লরিটিকে রাস্তার ধারে সরানোর কাজ তদারকি করছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি অনুযায়ী, ঠিক সেই সময় একটি বড়সড় ডাম্পার অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এসে খারাপ লরিটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। সেই ধাক্কার জেরে গুরুতর জখম হন রাজকুমারবাবু। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বহরমপুর শহরের বাসিন্দা রাজকুমার কর্মকারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা জুড়ে।
জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ হারানো রাজকুমার কর্মকারের মৃত্যুতে তাঁরা গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। সরকারি মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায়ই লরি, ট্রাক ও ডাম্পারের বেপরোয়া চলাচল দেখা যায়। বহুবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। এই ঘটনার পরে আবারও জাতীয় সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।