আয়ের ৫০% খরচ করতে হবে জনকল্যাণে, না হলে অনুদান নয়, পঞ্চায়েতকে বার্তা রাজ্যের
হিন্দুস্তান টাইমস | ১১ জুলাই ২০২৫
এবার থেকে রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলিকে নিজস্ব আয়ের অন্তত ৫০ শতাংশ খরচ করতেই হবে সাধারণ মানুষের স্বার্থে। তা না হলে বন্ধ হয়ে যাবে সরকারি অনুদান ও উৎসাহমূলক আর্থিক সহায়তা। এমনই কড়া বার্তা দিল নবান্ন। প্রতি বছর রাজ্য সরকার গ্রামোন্নয়নের জন্য বিপুল অর্থ বরাদ্দ করে পঞ্চায়েতগুলিকে। বাংলার বাড়ি, কর্মশ্রী, সড়ক নির্মাণের মতো একাধিক প্রকল্পে খরচ হয় সেই টাকা। পাশাপাশি পঞ্চায়েতগুলির রয়েছে নিজেদের রোজগারের উৎসও যেমন হাট, বাজার, ঘরভাড়া, ট্রেড লাইসেন্স, সম্পত্তি কর ইত্যাদি। এই আয় এলাকায় পরিকাঠামো উন্নয়নে খরচ করার কথা থাকলেও এতদিন তা কতটা হবে, তা নিয়ে ছিল না নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম। এবার সেই ফাঁক বন্ধ করল রাজ্য।
নবান্নের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয়ের অর্ধেক টাকা জনকল্যাণে খরচ করতেই হবে। যদি না করে, তবে বন্ধ হয়ে যাবে ‘পারফরম্যান্স গ্রান্ট’ অর্থাৎ কাজের ভিত্তিতে যে বাড়তি টাকা দিত রাজ্য, তা আর মিলবে না। পাশাপাশি আটকে যেতে পারে কেন্দ্র ও রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের অনুদানও।পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, সরকারের লক্ষ্য সাধারণ মানুষকে সর্বোচ্চ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। যখন কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে, তখন রাজ্য নিজের শক্তিতেই উন্নয়ন করতে চাইছে। তাই পঞ্চায়েতগুলির উচিত নিজেদের উপার্জন জনহিতেই কাজে লাগানো।
নতুন নিয়ম কার্যকর হচ্ছে এই অর্থবর্ষ থেকেই। জুলাই মাস থেকে শুরু হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাজের বার্ষিক মূল্যায়ন। তাতে মোট ২৭টি শর্ত রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি একেবারে নতুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।নিজস্ব আয়ের অন্তত ৫০ শতাংশ খরচ করতে হবে জনস্বার্থে এবং বার্ষিক আয় অন্তত ১০ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে হবে। রাজ্যের এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, এতদিন অনেক পঞ্চায়েত নিজেদের আয়ের টাকা অনুষ্ঠান আয়োজন বা অফিস খরচে ব্যয় করে ফেলত। উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সেই অর্থও যে ব্যবহার করা যায়, সে ধারণাই ছিল না অনেকের। এবার সেই ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
শুধু খরচ নয়, আয় বাড়ানোর দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলিকে অন্তত ৫০ শতাংশ সম্পত্তি কর আদায় করতে হবে। অর্থাৎ বাজেট ঘোষণার শুরু থেকেই পঞ্চায়েতগুলিকে পরিকল্পনা করতে হবে কীভাবে রোজগার বাড়ানো ও সেই অর্থ জনস্বার্থে খরচ করা যায়। প্রশাসনের মতে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে গ্রাম বাংলার নাগরিক পরিষেবার মান অনেকটাই বাড়বে। জনসচেতনতা ও স্বচ্ছতা দুই-ই নিশ্চিত হবে নতুন নিয়মে।