পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে জম্মু-কাশ্মীরে বিশ্বের উচ্চতম চেনাব রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী। তিরঙ্গা উড়িয়ে তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল, কাশ্মীর পর্যটনকে ধ্বংস করার কুচক্র ভেস্তে গিয়েছে। কিন্তু এ বার উল্টো সুর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কণ্ঠে? ‘কাশ্মীরে যেতে হলে জম্মুতে যান। যেখানে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি, সেখানে যাবেন না’, বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যে নতুন করে শোরগোল পড়েছে বঙ্গ রাজনৈতিক মহলে। সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তৃণমূলের হয়ে শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পাল্টা সুর চড়িয়েছেন শশী পাঁজা।
বৃহস্পতিবারই জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে পাশে নিয়ে রাজ্যের পর্যটকদের পহেলগাম দেখতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে কাশ্মীরে যাতে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্র সরকারকে পদক্ষেপ করতে হবে, এই বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই বার্তা দিয়েছেন, সেই সময়ে শুভেন্দু অধিকারী কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘কাশ্মীর যাওয়ার হলে জম্মুতে যান। যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা বেশি সেখানে যাবেন না। হিমাচল প্রদেশে যান। পুরো দেশ ঘোরা উচিত। কিন্তু বাংলার মানুষদের বলছি, যেখানে মুসলিম বেশি, সেখানে যাবেন না। আগে প্রাণ। জীবন রক্ষা করুন। ছোট ছোট শিশু, দিদি, বোনদের রক্ষা করুন।’
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য সামনে আসার পরেই রীতিমতো সরব তৃণমূল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে শশী পাঁজা বলেন, ‘পর্যটকদের কাশ্মীরে যেতে নিষেধ করছেন বিরোধী দলনেতা। আশা করি বাংলার পর্যটকরা তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই ধরনের মন্তব্যে আমরা অত্যন্ত বিরক্ত। কেন্দ্র জম্মু-কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি চেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ফলে বিরোধী দলনেতা এই কথা বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করে বলেছেন, না কেন্দ্র সরকারের নির্দেশে বলেছেন, তা জানা নেই। তবে এর দায়িত্ব তাঁকে নিতে হবে।’ তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকেও শুভেন্দুর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়।
যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘কোন প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা এ কথা বলেছেন আমার জানা নেই। কাশ্মীরে পাথর ছোড়া বন্ধ হয়েছে। পহেলগামের ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মনে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এখন তিনি ঠিক কী প্রেক্ষিতে এ কথা বলেছেন আমার জানা নেই। ওঁর হয়তো হিমাচল প্রদেশ আরও সুন্দর লেগেছে, তাই বলেছেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে কোনও বিতর্ক নেই।’