মুম্বই পুলিশ পরিচয়ে ফোন করে গ্রেফতারের হুমকি, ভয় পেয়ে ৩০ লাখ টাকা দিয়েও দিলেন আয়কর কর্মী! বর্ধমানে ধৃত তিন
আনন্দবাজার | ১১ জুলাই ২০২৫
মুম্বই পুলিশ পরিচয়ে ফোন করে গ্রেফতারের হুমকি! সেই ভয় দেখিয়েই ৩০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অমিত দাস, প্রীতম মণ্ডল ওরফে বাবাই ও সৌম্যজিৎ দাস ওরফে রনি। সকলেরই বাড়ি নদিয়ার কল্যাণী থানার গয়েশপুরে। অমিতই প্রতারণাচক্রের মূল পাণ্ডা বলে জেনেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থানা এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি রাউটার উদ্ধার করে পুলিশ। জেরায় তিনি প্রতারণায় অমিতের জড়িত থাকার কথা জানান। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অমিত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে তা প্রীতম এবং সৌম্যজিতের কাছে পাঠান। এর পরেই স্থানীয় থানার সাহায্য নিয়ে গয়েসপুর থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় ধৃতেরা প্রতারণায় জড়িত থাকার কথা কবুল করেছেন বলে পুলিশের দাবি।
অমিতের অফিস থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নথিপত্র, তিন লক্ষ টাকা, অমিতের নামে থাকা তিনটি পরিচয়পত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল, পেনড্রাইভ, হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। প্রতারণার বিষয়ে বিশদে জানতে এবং আরও বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করতে তিন জনকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। তিন জনের তিন দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন সিজেএম।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলকোট থানার শীতলগ্রামের বাসিন্দা সাধন প্রামাণিক বর্তমানে বর্ধমান শহরের আয়কর আবাসনে থাকেন। তিনি আয়কর দফতরের কর্মী। গত বছরের ১৮ নভেম্বর তাঁর মোবাইলে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। মুম্বই পুলিশের পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করা হয়। সাইবার প্রতারণার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ ৩৫ হাজার ১১৮ টাকা আদায় করে প্রতারকেরা। পুরো টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। পরে তিনি প্রতারিত হয়েছেন বলে বুঝতে পারেন। তিনি ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ দায়ের করেন। এ ছাড়া সাইবার ক্রাইম পোর্টালেও অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পরে ঘটনার কথা জানিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মুম্বই পুলিশের পরিচয় দিয়ে তাঁকে নানা ভাবে ভয় দেখানো হয়। এতে তিনি চরম আতঙ্কে রয়েছেন বলে অভিযোগে জানান প্রতারিত। অভিযোগ পেয়ে কেস রুজু করে তদন্তে নামে বর্ধমান থানার পুলিশ।