• জন্মদিনের পার্টিতে তৃণমূল নেতা খুন দলেরই নেতার হাতে! ব্যবসা নিয়ে বিবাদ বলে প্রাথমিক অনুমান
    আনন্দবাজার | ১১ জুলাই ২০২৫
  • জন্মদিনের পার্টিতে এক তৃণমূল নেতাকে খুনের অভিযোগ উঠল অন্য এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনা মালদার ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুরের। নিহত তৃণমূল নেতার নাম আবুল কালাম আজাদ। ঘটনায় তাঁর স্ত্রী শিউলি খাতুন-সহ আরও তিন জন আহত হয়েছেন। তাঁরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মাইনুল শেখ কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাইনুল শেখ কংগ্রেসের হয়ে ভোটে জিতে পরবর্তী কালে তৃণমূলে যোগ দেন।

    নিহত এবং অভিযুক্ত, উভয়ের বাড়িই মানিকচকের গোপালপুর এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরেই অভিযুক্ত মাইনুলের সঙ্গে জমির ব্যবসা করতেন নিহত আবুল। বৃহস্পতিবার রাতে আবুল তাঁর স্ত্রী এবং বেশ কয়েক জনের সঙ্গে লক্ষ্মীপুরে এক জনের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানেই জমির ব্যবসা নিয়ে মাইনুলের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিবাদের জেরেই ঘর বন্ধ করে আবুলকে কুপিয়ে খুন করেন মাইনুল। আহত হন আবুলের স্ত্রী-সহ তিন জন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইনুল অতীতে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল টিকিট দেয়নি তাঁকে। তাই ভোটের আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। এর পরে কংগ্রেসের টিকিটে জয়লাভ করে ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করেন মাইনুল। স্থানীয়দের দাবি, তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ রয়েছে। অভিযোগ, নয় বিঘা জমি নিয়ে এবং টাকা নিয়ে আবুলের সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয়। তার জেরেই আবুলকে মাইনুল খুন করেছেন বলে অভিযোগ।

    মালদহের তৃণমূল ব্লক প্রেসিডেন্ট প্রতিভা সিংহ দাবি করেছেন, অভিযুক্ত মাইনুলের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকায় তিনি পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট দেননি। তাঁর কথায়, ‘‘মাইনুল ২০১৮ সালে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছিল। ওর নামে অনেক অভিযোগ ছিল। তাই ওকে গত পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট দিইনি। কে বা কারা ওকে আবার দলে যোগদান করিয়েছে জানি না। আমি যোগদান করাইনি। টাকার বিনিময়ে জিতেছে এ বার। ওর সংগঠন করার ক্ষমতা নেই।’’ অভিযোগ, জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির হাত ধরে আবার তৃণমূলে ফিরেছেন মাইনুল। সেই আব্দুর অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘এ সব মহিলাঘটিত ঘটনা। দলের কেউ জড়িত নন। পুলিশ তদন্ত করে গ্রেফতার করুন। যাঁরা এ সব কাজ করেছেন, তাঁরা দলের কর্মী নন।’’ বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল অপরাধী, মাটির দালালদের নিজের দলে নিয়েছে। এ বার নিজেদের মধ্যে মুনাফা নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এই খুন যেমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে হয়েছে, তেমনই অবৈধ ব্যবসার মুনাফা ভাগাভাগি নিয়ে ঝামেলাও খুনের কারণ।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)