• ফেরেনি বিদ্যুৎ, কী অবস্থায় আত্মীয়েরা রয়েছেন, দুশ্চিন্তা
    আনন্দবাজার | ১১ জুলাই ২০২৫
  • জয় হিন্দ কলোনিতে জল-বিদ্যুৎ বন্ধ করার পিছনে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন ওঁরা। দিল্লির বসন্তকুঞ্জের ওই এলাকায় থাকা আত্মীয়েরা কী অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়ে ভুগছেন দুশ্চিন্তায়। পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় সে দিকেই নজর সম্প্রতি সেখান থেকে কোচবিহারের দিনহাটায় ফেরা বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবারেও বিদ্যুৎ আসেনি কলোনিতে। সংখ্যায় কম হলেও, জলের ট্যাঙ্কার এসেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে এ দিন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কলোনির স্থানীয় বাসিন্দারা।

    রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ওই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন। সমাজমাধ্যমে তাঁর অভিযোগ, বিজেপি পরিচালিত সরকারের নির্দেশে জল বন্ধ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এক প্রকার জবরদস্তি উচ্ছেদ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ, ‘‘গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা ও মধ্যপ্রদেশ থেকে বাংলাভাষীদের উপরে নিপীড়ন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্বেষের ছায়া এসে পড়েছে দেশের রাজধানীতেও।’’ বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। শুরু পাল্টা তোপও।

    ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করেন দিনহাটার নাজিরহাটের বাসিন্দা মোজাম্মেল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘ইদের জন্য বাড়িতে এসেছি। হঠাৎ শুনি, কলোনিতে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। জল বন্ধ। দুই ভাই, দুই বোন ছেলেমেয়েদের নিয়ে সেখানে খুব কষ্টে রয়েছে। কী হয়, কে জানে!’’ একই এলাকার রফিকুল শেখের দাবি, ‘‘২০১৪ সালে জয় হিন্দ কলোনিতে এক বার আগুন লেগেছিল। তার পর থেকে ওই এলাকায় টানা রয়েছি। এখন আমাদের সরাতে চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’’ কলোনিতেই থাকা নাজিরহাটের নুরুল হক ফোনে বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে যে কী কষ্টে রয়েছি, বোঝাতে পারব না!’’

    মুখ্যমন্ত্রী এক্স হ্যান্ডল-এ বলেছেন, ‘‘দেশেই বাংলার মানুষ যদি অনাহূত অতিথির মতো আচরণের শিকার হন, তা হলে আমরা চুপ করে থাকব না। বাংলা সমস্ত নির্যাতিত কণ্ঠের পাশে দাঁড়াবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বত্র আওয়াজ তুলব।” যদিও বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয়ের দাবি, ‘‘যা করা হয়েছে, তা আদালতের নির্দেশ মেনেই করা হয়েছে। ওই বসতি অবৈধ। এটা কোনও সমাপতন নয় যে, ওই এলাকা থেকেই কয়েক দিন আগে ২৬ জন বাংলাদেশিকে ধরা হয়েছিল।’’ রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে বাংলার মানুষের সমস্যায় পড়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তার থেকে বড় প্রশ্ন, বাংলা তো সবেতেই এক নম্বরে। তা হলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকে চাকরির আশায় ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে থাকছেন কেন! জবাব দিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল নেতৃত্বকেই।’’ দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহের মন্তব্য, ‘‘বিজেপি বাংলার মানুষকে মনে-প্রাণে ঘৃণা করে। শুধু ভোটের জন্য নানা কথা বলে।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রউফ জানান, দিল্লিতে থাকা দিনহাটার বাসিন্দাদের আইনি সহায়তাকরবেন তাঁরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)