• বাড়িতে বাবার মৃতদেহ, রোগীদের দেখে তবেই শ্মশানঘাটে গেলেন কর্তব্যে অবিচল হুগলির ডাক্তারবাবু
    আনন্দবাজার | ১১ জুলাই ২০২৫
  • চেম্বারে রোগীর ভিড়। তার মাঝেই বাবার মৃত্যুসংবাদ পেলেন চিকিৎসক। কিন্তু কর্তব্যে অবিচল তিনি। ডাক্তারবাবুর পিতৃবিয়োগের খবর ঘুণাক্ষরে টের পেলেন না রোগীরা। সমস্ত রোগী দেখার পর বাড়ি গেলেন চিকিৎসক। তার পর বাবার মরদেহ নিয়ে পা বাড়ালেন শ্মশানের দিকে। হুগলির চুঁচুড়ার ইমামবাজার অঞ্চলের চিকিৎসক শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করালেন ‘অগ্নীশ্বর’ ছবির চিকিৎসক উত্তম কুমারকে।

    স্থানীয়েরা বলছেন, দিনভর ভিড় লেগে থাকে শিবাশিসবাবুর চেম্বারে। রাত জেগে রোগী দেখেন ডাক্তারবাবু। হুগলি তো বটেই পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকেও রোগীরা যান ‘শিবাশিস ডাক্তার’-এর চেম্বারে। রোগী এবং পরিজনদের কাছে তিনি ‘ব্যতিক্রমী’ ডাক্তার। কারণ, রোগীদের কখনও ফেরান না। কিন্তু শুক্রবার নিজের জীবনের এত বড় বিয়োগের মাঝেও যে ভাবে ঠান্ডা মাথায় নিজের কর্তব্য পালন করলেন, সে জন্য ডাক্তারবাবুকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে।

    দীর্ঘ রোগভোগের পরে শুক্রবার সকালে শিবাশিসবাবুর বৃদ্ধ বাবা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়। তখন চেম্বারে শিবাশিস। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে জানলা দিয়ে দেখেন ধুম বৃষ্টি। বৃষ্টি মাথায় করে কত রোগী ছুটে এসেছেন তাঁর কাছে। সকলকে ফিরিয়ে দেবেন? সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তারবাবু। ঠিক করেন রোগী দেখেই বাড়ি ফিরবেন।

    শেষমেশ রোগী দেখা শেষ করেই বাবার দেহ সৎকার করতে শ্মশানে নিয়ে যান ডাক্তারবাবু। তাঁর এই দায়িত্ববোধ দেখে ধন্য ধন্য করছেন সকলে। চুঁচুড়া পুরসভার কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ দত্তের কথায়, ‘‘অনেক গরিব মানুষ ডাক্তারবাবুর কাছে আসেন। রাত ২টো-৩টে পর্যন্ত উনি রোগী দেখেন। যে যা দেন ‘ফি’ হিসাবে, তা-ই নেন। কোনও চাহিদা নেই ওঁর। এমন ডাক্তারবাবুর জন্য এলাকাবাসী হিসাবে আমরা গর্বিত। ওঁর পিতৃবিয়োগের খবর পেয়েছি। সমবেদনা জানালাম ওঁকে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)