টেটে ভুল প্রশ্ন মামলা: পুরনো কমিটিতে মতভেদ, আবার নতুন কমিটি বেছে দিল হাই কোর্ট
আনন্দবাজার | ১১ জুলাই ২০২৫
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ পরীক্ষার (টেট) ‘ভুল প্রশ্ন’ সংক্রান্ত অভিযোগের মামলায় আবার নতুন কমিটি গঠন করল কলকাতা হাই কোর্ট। এর আগে এই মামলাতেই একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিল উচ্চ আদালত। কিন্তু কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়। ফলে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারেনি ওই কমিটি। শুক্রবার তাই নতুন কমিটি গড়ে দিয়েছে হাই কোর্ট।
২০১৭ এবং ২০২২ সালের টেটে ৪৭টি প্রশ্নে ‘ভুল’ আছে, এই অভিযোগে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে গত বছরের অগস্টে বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল কমিটি গঠন করার। কমিটির দায়িত্ব ছিল, ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই করে দেখবে তারা। তবে সেই কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেওয়ায় শুক্রবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়।
নতুন কমিটিতে থাকবেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক জন করে বিশেষজ্ঞ। বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই কমিটিই যাচাই করে দেখবে প্রশ্নে ভুল ছিল কি না। কমিটিকে জানাতে হবে, কতগুলি প্রশ্ন ভুল ছিল এবং সেগুলির সঠিক উত্তর কী হবে। উল্লেখ্য, অতীতে হাই কোর্ট যে কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল সেই কমিটিতে ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পর্ষদের বিশে়ষজ্ঞেরা।
ভুল প্রশ্ন মামলায় আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, ২০১৭ সালের প্রশ্ন বিশ্বভারতীর বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং ২০২২ সালের প্রশ্ন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি খতিয়ে দেখবে। তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এই মামলায় পর্ষদের দাবি ছিল, তারা নিজেরাই বিষয়টি যাচাই করতে সক্ষম। সেই সঙ্গে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, একটি পরীক্ষা সংগঠিত করতে সময় ব্যয় হয়, পরিশ্রম করতে হয়। যাঁরা পরীক্ষায় অসফল হন তাঁরাই কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুলে মামলা করেন। সেই মামলাতে ডিভিশন বেঞ্চও কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়। তবে সেই কমিটিতে রাখা হয় পর্ষদের সদস্যকেও।
মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘তৃণমূল জমানায় প্রতিটি টেটে প্রশ্ন ভুলের অভিযোগ। বিগত দু'টি টেটেও একই অভিযোগ। বলা যায়, এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি করার জন্যই এমন করা হয়ে থাকতে পারে।’’