• আইআইএম জোকায় ধর্ষণ, অভিযুক্ত ম্যানেজমেন্ট ছাত্র
    বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কসবা ল’কলেজে গণধর্ষণ কাণ্ডের রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই শুক্রবার সামনে এল আরও এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনা। খাস আইআইএম জোকার অন্দরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল সেখানকারই এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা। 

    অভিযোগপত্রে তরুণী দাবি করেছেন, কাউন্সেলিং সেশনের জন্য আইআইএমের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরমানন্দ জৈন এদিন তাঁকে জোকা ক্যাম্পাসে যেতে বলেছিলেন। কর্মসূত্রেই ওই পড়ুয়ার সঙ্গে কয়েকদিনের আলাপ নির্যাতিতার। তরুণীর অভিযোগ, ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় ভিজিটার্স বুকে নাম নথিভুক্ত করতে দেননি পরমানন্দ। মনে প্রশ্ন জাগলেও গা করেননি তরুণী। তারপর কাউন্সেলিং সেশনের গন্তব্যে না গিয়ে ওই ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া তাঁকে ছেলেদের হস্টেলের দিকে নিয়ে যান। বলেন, একটা জরুরি জিনিস নিতে হবে। সেখানে গিয়ে তাঁকে পিৎজা খেতে দেন অভিযুক্ত ছাত্র। সঙ্গে যে পানীয় জল তাঁকে দেওয়া হয়, সেটি খেয়েই প্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তরুণী। তাঁর গা গোলাতে থাকে। কিন্তু, তাঁকে বাথরুমে যেতে বাধা দেন অভিযুক্ত ছাত্র। ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন। তরুণীর অভিযোগ, তিনি বাধা দেন এবং আত্মরক্ষার্থে ওই পড়ুয়াকে চড়ও মারেন। কিন্তু, আচ্ছন্নতার সুযোগ নিয়ে পরমানন্দ তাঁর চুল টেনে ধরেন ও ঘাড় চেপে ধরে মাথা ঠুকে দেন। এরপরই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিসকে জানিয়েছেন তরুণী। প্রথমে খানিকটা বোধ হলেও পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। সন্ধ্যার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে অভিযুক্ত পরমানন্দের হোস্টেলেই আবিষ্কার করেন। সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে নির্যাতিতা প্রথমে তাঁর এক বন্ধুকে পুরো ঘটনা জানান। তারপর দু’জন মিলে ঠাকুরপুকুর থানায় পৌঁছন। যেহেতু ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস হরিদেবপুর থানা অধীনে, তাই তাঁরা সেখানে গিয়েই অভিযোগপত্র জমা দেন। 

    সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজের ঘটনার পর পুলিস এমনিতেই নড়েচড়ে বসেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির জন্য আলাদা করে এসওপি জারি হয়েছে। তারপরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাইরের কেউ প্রবেশের সময় কেন রেজিস্টারের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষী সক্রিয় হলেন না, সেই প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি, বয়েজ হস্টেলের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ থেকে যাচ্ছে। নির্যাতিতা কিন্তু অভিযোগ করেছেন, হস্টেলের ঘরের পরিবেশ মোটেই সুবিধার ছিল না। চারদিকে বোতল ছড়িয়ে ছিল। 

    এফআইআর হওয়া মাত্র পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে গিয়ে অকুস্থল ঘিরে দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। ওই স্পট থেকে ফরেন্সিকের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত পরমানন্দ ফেরার। তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। গভীর রাতে অবশ্য একজনকে আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সেই ব্যক্তিই অভিযুক্ত কি না, তা খোলসা করা হয়নি। 
  • Link to this news (বর্তমান)