• ঘোর বর্ষার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক, পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চিন্তায় সংসদও
    আনন্দবাজার | ১২ জুলাই ২০২৫
  • ভরা বর্ষার মধ্যেই শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। তাই কোথাও টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করা হবে। পরীক্ষার্থীদের আগেই ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে। শুক্রবার এমনই জানালেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিচিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।

    উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এ বার থেকে তৃতীয় এবং চতুর্থ সিমেস্টার নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের সামগ্রিক মূল্যায়ন হবে। তাই তৃতীয় সিমেস্টার পরীক্ষার্থীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা শুরু হচ্ছে ৮ সেপ্টেম্বর। ওই মাসে সাধারণত যথেষ্ট পরিমাণ বৃষ্টি হয়। অতীতে দেখা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরে রাজ্যের বহু এলাকাই বন্যা-কবলিত অবস্থায় থাকে। তাই এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, এলাকায় বন্যা হলে কী ভাবে তাঁদের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দেবে? তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা অন্য স্কুলে গিয়ে দিতে হবে। সেই স্কুল যদি দূরে হয়, তা হলে চিন্তা আরও বেশি। এ সব আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তাদেরবৈঠকও হয়েছে।

    চিরঞ্জীব বলেন, “আমরা সম্প্রতি বিভিন্ন জেলার প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে জেলা স্কুল পরিদর্শকেরাও ছিলেন। ছিলেন জেলাশাসকেরাও। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রধান পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রশ্নপত্র রাখার জায়গা এমন এলাকায় করতে হবে, যেখানে বন্যার কোনও ইতিহাস নেই। কোনও পরীক্ষা কেন্দ্রে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে শেষ মুহূর্তে সেই কেন্দ্র পাল্টানো হবে। তবে, পরীক্ষা কেন্দ্র পাল্টাতে হলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অনুমতি নিতে হবে।” ইতিমধ্যেই সংসদের কর্তারা বিভিন্ন জেলায় ঘুরে পরীক্ষা কেন্দ্র কোথায় কোথায় হতে পারে, তা দেখছেন। এক কর্তার কথায়, “পরীক্ষার্থীরা নিজেদের স্কুলে পরীক্ষা দিতে পারবে না ঠিকই, কিন্তু তাদের পরীক্ষা কেন্দ্র যাতে বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে না হয়, সেই বিষয়টিকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। কারণ, বন্যা হয়তো হল না, কিন্তু খুব বেশি বৃষ্টি হলেও তো পরীক্ষার্থীদের পক্ষে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো কঠিন হয়ে যাবে।”

    কোনও এলাকায় বন্যা হলে সেখানকার পরীক্ষার্থীদের ত্রাণ শিবিরে আগে থেকেই নিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন চিরঞ্জীব। বাড়ি থেকে কী ভাবে তাদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হবে, সেই বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং জেলা প্রশাসনকে ঠিক করতে হবে।তবে, এত রকম পরিকল্পনার পরেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল বা হুগলির আরামবাগের মতো এলাকা নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় আছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।সংসদের কর্তারা জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক কর্তাদের আগে থেকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। চিরঞ্জীব বলেন, “পরীক্ষার সময়ে কোনও এলাকায় বন্যা হলেও আমরা পরীক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করছি যে, পরীক্ষা দিতে অসুবিধা হবে না। পশ্চিমমেদিনীপুরের ঘাটাল বা হুগলির আরামবাগে বেশ কিছু বিকল্প পরীক্ষা কেন্দ্র আগে থেকেই তৈরি রাখা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ত্রাণ শিবিরও আগে থেকে প্রস্তুত রাখা হবে। সেই সমস্ত শিবিরে তারা যাতে পড়াশোনা করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করা হবে।’’

    উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তার কথায়, ‘‘বর্ষা চললেও তৃতীয় সিমেস্টারের দিনক্ষণ পিছনো যাবে না। কারণ, তা হলে আবার চতুর্থ সিমেস্টারের জন্য পড়াশোনার সময় কমে যাবে। চতুর্থ সিমেস্টারের পরীক্ষাও পিছিয়ে দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরোতে দেরি হয়ে যাবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)