বিহারের মতো কম সময়ে নয়, বরং হাতে সময় নিয়ে এ রাজ্যে নিবিড় সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্টে এই সমীক্ষা সংক্রান্ত মামলার শুনানি হচ্ছে। তার গতিপ্রকৃতি দেখে এ রাজ্যে সমীক্ষার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে বলে খবর। তবে কমিশন সূত্রের বক্তব্য, আগামী বছর এই সমীক্ষার চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হলেও, ওই বছর বিধানসভা ভোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগে পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম ওঠার সুযোগ থাকবে যোগ্য নাগরিকদের কাছে। কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, আগের নিবিড় সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক দল—সকলেই তা মিলিয়ে দেখতে পারবে।
বিহারের সূত্র টেনে এ রাজ্যে এমন সমীক্ষায় আপত্তি তুলছে শাসক দল তৃণমূল। ফলে বিধির যথাযথ প্রয়োগ এবং পদ্ধতি নিয়ে যাতে প্রশ্ন না থাকে, তা নিশ্চিত করতে চাইছে কমিশন। প্রাক্তন এক আমলার বক্তব্য, “দেশের সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরিতে ক্ষমতা দিয়েছে। রাজনৈতিক বিতর্ক উঠতেই পারে। তবে পদ্ধতিটি বিধি অনুসারে চললে বাধা নেই কমিশনের সামনে।” কমিশনের এক কর্তার কথায়, “ক্ষমতা অনেক ধরনেরই রয়েছে। বিগত দিনে তার পুরোটা কার্যকর হত তা নয়। যে কারণে এত বছর ধরে নিবিড় সমীক্ষা হয়নি। তবে এখন সব ক্ষমতা নিয়মানুসারে কার্যকর হবে।”
এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, তাতে আগামী নভেম্বরের গোড়ায় সমীক্ষার ভিত্তিতে হওয়া খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। সেই তালিকা নিয়ে দাবি-আপত্তি জানানোর সময় দেওয়া হবে। জমা পড়া সেই সব দাবি এবং আপত্তি নিষ্পত্তি করে আগামীবছরের শুরুতেই প্রকাশ পাবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, ২০০২ সালে শেষ বার হওয়া এই সমীক্ষার পরে সংশ্লিষ্ট তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁদের আর নতুন করে নথি দাখিল করতে হবে না। তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রেওমা-বাবার সম্পর্ক প্রমাণে থাকবে না ঝক্কি। যদি দেখা যায়, কোনও কারণে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় যোগ্য কারও নাম নেই, সেই নাম তোলার সুযোগ থাকবে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই ভোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগে পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন করা যাবে এবং সংশ্লিষ্টরা ভোটও দিতে পারবেন।
কিন্তু সে ক্ষেত্রে বাদ পড়া যোগ্যদের হয়রানি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। নিজের ভুল না থাকলে, নাম বাদ যাওয়ার দায় কেন এক জন নেবেন, প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়েও।
কমিশন সূত্রে এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে নভেম্বরের গোড়ায় খসড়া তালিকা প্রকাশ করতে হলে কাজ শুরু করতে হবে আগামী মাসেই। কারণ, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে এবং অক্টোবরের অনেকটা সময় পুজো-উৎসবের ছুটি। ফলে সেই সময়ে কাজের গতি কিছুটা শ্লথ থাকবে। উৎসব মিটে গেলে ফের পুরোদমেহবে কাজ।