প্রায় ১০০ কোটি টাকার শেয়ার লগ্নি এবং ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সংক্রান্ত দিল্লির একটি মামলায় কলকাতা, মুকুন্দপুর ও মহেশতলা এলাকা-সহ চার জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাল ইডি।
শুক্রবার সকালে মুকুন্দপুরের একটি বহুতল আবাসনের ১৭তলায় এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিক লেসলি অ্যান্থনি নামে এক জনের ফ্ল্যাটে অভিযানের জন্য আসেন তদন্তকারীরা। তবে ওই ফ্ল্যাটটি বিশাখা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক মহিলার। তিনি সেটি অ্যান্থনিকে ভাড়া দিয়েছিলেন। তবে সূত্রেরখবর, সম্প্রতি অ্যান্থনি ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এ দিন ফ্ল্যাটের তালা খুলে অভিযান চালান তদন্তকারীরা।
মুকুন্দপুরের পাশাপাশি মহেশতলা পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম জগতলার মনোরমা অ্যাপার্টমেন্ট নামে একটি আবাসনের বাসিন্দা, সঞ্জয় রাউতের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। তবে এ দিন সকাল থেকেই ফ্ল্যাটে ছিলেন না সঞ্জয়। তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তল্লাশি অভিযান করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে ওই আবাসনে ফ্ল্যাট কিনেছেন সঞ্জয়। আবাসিকদের কথায়, একটি বেসরকারি সংস্থায় তিনি কাজ করতেন বলে শোনা গিয়েছে। মাঝেমধ্যেই সপরিবার কলকাতার বাইরে চলে যেতেন তিনি। আবাসিকদের সঙ্গে তেমন মেলামেশা ছিল না সঞ্জয়ের। তবে তাঁর স্ত্রী সবার সঙ্গেই কথা বলতেন।
ইডি সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে মুরুগেশ দেবসারিয়া নামে গুজরাতের বাসিন্দা এক ব্যক্তি কলকাতার তপসিয়া এলাকায় একটি শেয়ারে লগ্নির সংস্থা খুলেছিলেন। অভিযোগ, ওই সংস্থার অন্যতম অধিকর্তা ছিলেন সঞ্জয়। শেয়ার বাজারে টাকা লগ্নি করলে তা কয়েক বছরেই দ্বিগুণ পরিমাণে ফেরত দেওয়া হবে, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহু লোকের থেকে টাকা তোলা শুরু করেছিল সংস্থাটি। সম্প্রতি দিল্লির এক দম্পতি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে তিন কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে ইডি। গুজরাতের বাসিন্দা মুরুগেশকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক মারফত এই আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছিল। ওই ব্যাঙ্কেরই উচ্চপদস্থ কর্তা লেসলি অ্যান্থনি। প্রতারণা চক্রে তিনি জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ।
ইডি সূত্রের খবর, বাজার থেকে ৯৩ কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে মুরুগেশ ও তার সহযোগীরা। মুরুগেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সঞ্জয় রাউত এবং লেসলি অ্যান্থনির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।